নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণার সময় প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত ভাইস চেয়ারম্যানপ্রার্থী মো. সুমন মিয়ার মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকেলে উপজেলার সেরাজনগর এম.এ.পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাদ আছরের পর এবং নিজ গ্রাম চরসুবুদ্ধি ঈদ গাঁ মাঠে বাদ মাগরিব জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

প্রথম জানাজায় পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুল আলম শাহীনের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট এবিএম রিয়াজুল কবীর কাওসার, সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলী, রায়পুরা পৌরসভার মেয়র জামাল মোল্লা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক ইমান উদ্দিন ভূইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ পার্থ, রায়পুরা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ সাফায়েত হোসেন পলাশ, উপজেলা চেয়ারম্যান ফোরামের সভাপতি ও অলিপুরা ইউপি চেয়ারম্যান আল-আমিন ভূইয়া মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক ও শ্রীনগর ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ মুর্শেদ খান রাসেল, মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মুঞ্জুর এলাহীসহ জেলা ও উপজেলার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দসহ হাজারও মানুষ।

নিহত সুমন মিয়া উপজেলার চরসুবুদ্ধি ইউপি চেয়ারম্যান হাজী নাসির উদ্দীনের ছেলে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এবং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন তিনি।

এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু নিহত সুমনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, সুমন একজন ভালো ছেলে ছিল। সে খুব মেধাবী ও ছাত্রলীগের সাবেক একনিষ্ঠ কর্মী ছিল। তাকে যারা হত্যা করেছে এবং এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী যারা তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।

প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সুমনের হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করতে হবে। নয়তো কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এ ছাড়া সুমন হত্যার অন্যতম আসামি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যু রুবেলকে যে ধরিয়ে দিতে পারবে তাকে এক লাখ টাকা পুরস্কার প্রদান করা হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।

পরে বক্তারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার না করতে পারলে জেলায় নৌপথ, রেলপথ, সড়কপথে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

প্রসঙ্গত, গত ২২ মে দুপুরে উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের মামদিরকান্দি এলাকায় গণসংযোগে যান চশমা প্রতীকের প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল ও তালা প্রতীকের প্রার্থী সুমন মিয়া। দুপুর দেড়টার দিকে মামদিরকান্দি এলাকায় দুজনের সমর্থকরা মুখোমুখি অবস্থানে যান। প্রথমে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে সুমন মিয়ার প্রচারণার গাড়ি থেকে আবিদ হাসান রুবেল ও তার সমর্থকদের ওপর গুলি ছোড়া হয়। এ সময় রুবেলের সমর্থকরা সুমন ও তার সমর্থকদের ঘেরাও করে ফেলে। সুমন দৌড়ে পালিয়ে পাশের মীরেরকান্দি এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। রুবেলের সমর্থকরা পিছু নিয়ে সুমনকে আটকে মারধর করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দিকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রায়পুরা থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার আব্দুল হালিম জানান, এ ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে দুইজনকে আটক করেছে রায়পুরা থানা পুলিশ। অন্য আসামিদের ধরার সুবিধার্থে আটককৃতদের নাম-পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তন্ময় সাহা/এমজেইউ