‘শামীম, বেলাল, ১৫৮০, ৬৩ কে।’ নাম আর সংখ্যাগুলোর ভিন্ন মানে রয়েছে আমের হাটে। শুধু যারা আম কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িত তারাই জানেন এমন নাম ও সংখ্যার মানে। এমনভাবে অসংখ্য আমের গায়ে প্রতিদিন বানেশ্বর হাটে লেখেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।

আমের গায়ে লেখা নিয়ে বানেশ্বর আম হাটের ব্যাপারী আব্দুল মালেক ঢাকা পোস্টকে জানান, শামীম মানে আড়তদার আর বেলাল মানে আড়তদারের প্রতিনিধি, যিনি হাটে আম কিনছেন। তারপর আড়তদার শামীমের গোডাউনে পাঠাবেন। আর ১৫৮০ হচ্ছে আমের দাম। অর্থাৎ ১৫৮০ টাকা মণ দরে হাট থেকে কিনেছেন বেলাল। আর ৬৩ কে হচ্ছে ৬৩ কেজি। অর্থাৎ বেলাল ৬৩ কেজি আম কিনেছেন।

ব্যাপারী আব্দুল মালেক আরও জানান, আমের গায়ে লেখার অনেক সুবিধা রয়েছে। ঘামে নষ্ট হবে না। বৃষ্টিতে ধুয়ে যাবে না। কারণ আম উঠার এই সময়ে গরম ও বৃষ্টিপাত হয়। ফলে কাগজ ব্যবহার করলে সেটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। তাই যুগ যুগ ধরে আমের হাটে এভাবে দাম লেখা হয়।

দীর্ঘ ২০ থেকে ২২ বছর ধরে বিভিন্ন হাটে আম কেনা-বেচা করেন সেলিম রেজা। তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, আমের গায়ে লেখার প্রচলন দীর্ঘদিনের। প্রতিটি হাটে এভাবে লেখা হয় আমের দাম। কাগজে লেখালেখি করেন অনেকেই। তবে বেশির ভাগ মানুষ আমের গায়ে দাম লেখেন। এই লেখা ঘাম বা বৃষ্টিতে মুছে যায় না।

আড়তদার শামীম আহম্মেদ জানান, তাদের কয়েকজন প্রতিনিধি রয়েছে। তারা হাট ঘুরে বিক্রেতা বা চাষির সঙ্গে দর কষাকষি করে আম কেনেন। এরপর সেই আমগুলো ভ্যান বা নসিমন-করিমনে আড়তের ঠিকানায় পাঠানো হয়। তার আগে যে আড়তে আম যাবে তার নাম, যে ব্যাপারী কিনে পাঠিয়েছেন তার নাম, কত টাকা দরে কেনা হয়েছে, কত কেজি আম তাও লেখা থাকে একটি আমের গায়ে।

এ বিষয়ে বানেশ্বর আম হাটের আড়তদার মাসুদ রানা বলেন, আমের গায়ে দাম লেখা দীর্ঘদিনের প্রচলন। প্রায় সব আমের হাটে এভাবে দাম লেখা হয়। এরপর সেই আমগুলো আড়তে পাঠান তারা। এতে আড়তে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা বুঝতে পারেন আমের দাম। সেভাবে তারা চাষি বা ব্যবসায়ীর আমের দাম পরিশোধ করেন।

শাহিনুল আশিক/এমজেইউ