স্বামীকে হত্যায় স্ত্রীর যাবজ্জীবন, প্রেমিকসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে পরকীয়ার সম্পর্কের জেরে স্বামীকে হত্যার ঘটনায় স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রেমিকসহ তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৪ জুন) বিকেলে বগুড়ার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাবিবা মণ্ডল এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন বগুড়ার সারিয়াকান্দির শিবলু ফকির, শান্ত মিয়া ও মো. নাইম। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মিনা বেগম সারিয়াকান্দির হাটফুলবাড়ীর বাসিন্দা।
বিজ্ঞাপন
নিহত আশিক মিয়া হাটফুলবাড়ীর মৃত সালাউদ্দিনের ছেলে। তিনি অটোরিকশা চালক ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, শিবলু ফকিরের সঙ্গে অটোরিকশা চালক আশিক মিয়ার স্ত্রী মিনা বেগমের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। এটা নিয়ে আশিক ও তার স্ত্রী মিনা বেগমের মধ্যে কলহ লেগেই থাকতো। হত্যার প্রায় চার মাস আগে বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে সালিশ বৈঠক হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আশিক মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শিবলু।
বিজ্ঞাপন
পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২ অক্টোবর সন্ধ্যায় আশিক মিয়ার অটোরিকশায় চড়ে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় শিবলু। ওই সময় শিবলুর দুই বন্ধু শান্ত ও নাইমও সঙ্গে ছিল। ঘুরতে ঘুরতে ছাগলধরা গ্রামের বাঙ্গালী নদীর ধারে যায় তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী রাত সাড়ে ১১টার দিকে তারা আশিককে শ্বাসরোধ এবং গোপনাঙ্গে আঘাত করে হত্যা করেন। পরে অ্যাসিড দিয়ে মুখ পুড়িয়ে বাঙ্গালি নদীতে মরদেহ ফেলে দেন হত্যাকারীরা। এরপর আশিকের অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যান তারা।
এসব বিষয় নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (এপিপি) আব্দুর রাজ্জাক খান জানান, মরদেহ উদ্ধারের পরের দিন ৫ অক্টোবর আশিকের বড় ভাই আনিস উদ্দিন বাদী হয়ে চার জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। সেই মামলায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এরপর দীর্ঘ শুনানীর পর আজ (৪ জুন) বিচারক হাবিবা মণ্ডল এ রায় দেন।
রায়ে শিবলু, শান্ত ও নাইমকে মৃত্যুদণ্ড এবং মিনা বেগমকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে স্ত্রী মিনা বেগকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন বিচারক। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা এজলাসে ছিলেন। পরে তাদের বগুড়া জেলা কারাগারে নেওয়া হয় বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
আসাফ-উদ-দৌলা নিওন/এএএ