ভুল চিকিৎসায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ
ফেনী শহরের ওয়ান স্টোপস মেটারনিটি নামে একটি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় আতিফ ইসলাম নিশান (১৩) নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৪ জুন) তার মৃত্যু হয়।
নিশান নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার দক্ষিণ মোহাম্মদপুর এলাকার মোহাম্মদ শহীদ উল্যাহর ছেলে। সে মোহাম্মদপুর আনিছ হাফেজিয়া মাদ্রাসার হিফয বিভাগের অধ্যয়নরত ছিল।
বিজ্ঞাপন
নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৩ জুন) বিকেলের দিকে নিশানের গলার টনসিল সমস্যায় অস্ত্রোপচারের জন্য ডা. কিশোর কুমার হালদারের পরামর্শে ফেনী শহরের শহীদ শহিদুল্লাহ কায়সার সড়কের ওয়ান স্টোপস মেটারনিটি ক্লিনিকে ভর্তি করেন। রাত ১১টায় অস্ত্রোপচার শেষ করে চিকিৎসক ক্লিনিক ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে এনেস্থিসিয়ার চিকিৎসক নাজমুল হক ভূঁইয়া সফলভাবে অস্ত্রোপচার শেষ হয়েছে বলে নিশানের বাবাকে জানান। তার কিছুক্ষণ পর হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হন্তদন্ত হয়ে অপারেশন থিয়েটারের দিকে ছুটতে থাকেন।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
নিশানের বাবা মোহাম্মদ শহীদ উল্যাহ বলেন, বিকেলে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার পথ হেঁটে এসে সুস্থ ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই। চিকিৎসকরা বলেছেন এটি ছোট অপারেশন। তেমন কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু এনেস্থিসিয়া দেওয়ার পর আমার ছেলে আর চোখ খুলেনি। ভোর ৪টার দিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আমাকে ডেকে বলে রোগীর অবস্থা ভালো না। দ্রুত রোগীকে কুমিল্লা বা চট্টগ্রাম নিয়ে যেতে হবে। পরে কুমিল্লা মর্ডান হাসপাতালে নিলে সেখানে আইসিইউতে আমার ছেলের মৃত্যু হয়। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের গাফেলতির কথা সেখানেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে।
এনেস্থিসিয়া চিকিৎসক ও ওয়ান স্টোপস মেটারনিটি ক্লিনিকের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ নাজমুল হক ভূঁইয়া বলেন, অস্ত্রোপচারের জন্য তার মৃত্যু হয়নি। অস্ত্রোপচারের সময়ে এ সকল রোগী হার্ট ফেল করে মৃত্যু হয়। কুমিল্লা মর্ডান হাসপাতালের চিকিৎসকের দেওয়া মৃত্যুর সনদপত্রে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছে হার্ট ফেল করে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কারণ তদন্তের মাধ্যমে বের হয়ে আসবে।
এ ব্যাপারে ডা. কিশোর কুমার হালদার বলেন, রোগীর শারীরিক দুর্বলতার কারণে এনেস্থিসিয়ার পর হার্টবিট ও অক্সিজেন লেবেল কমে যায়। যার ফলে আর জ্ঞান ফিরে আসেনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে কুমিল্লা বা চট্টগ্রাম নিয়ে যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় থানায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। পরিবারের লোকজন চিন্তা করে সিদ্ধান্ত জানাবে বলেছে। মরদেহ ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তারেক চৌধুরী/এমএসএ