নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার হচ্ছে চোর, ডাকাত, লুটেরা ও ধর্ষক তৈরি করার দল। এই দেশে যে অনাচার চলছে তা আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগকেও হার মানিয়েছে। 

শুক্রবার (৭ জুন) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরের মুসলিম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে গণতন্ত্র মঞ্চের বিভাগীয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলে। 

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার দেশ চালাতে পারবে না। বিভিন্ন দেশের কাছে সরকার ১০০ বিলিয়ন ডলার ঋণগ্রস্ত। টাকা ফেরত চেয়ে দেশগুলো চাপ দিচ্ছে, কিন্তু সরকারের কাছে টাকা নেই। 

তিনি আরও বলেন, নতুন বাজাটে মানুষের কোনো পরিবর্তন হবে না। আড়াই লাখ কোটি টাকা উন্নয়ন বাজেট রাখা হয়েছে, কিন্তু সরকারের হাতে কোনো টাকা নেই। প্রত্যেক বছর আগের বছরের বাজেটের সঙ্গে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু এবার মাত্র ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। কারণ সরকারের কাছে টাকা নেই।

মান্না বলেন, তথাকথিত নির্বাচন আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করেনি বরং আরও দুর্বল করেছে। আমরা যা বলেছি তাই সত্যি হয়েছে। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়, একটি অন্তর্বর্তী সরকার হতে হবে এবং সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। বিগত নির্বাচনে আমাদের ডাকে মানুষ ভোট বর্জন করেছে এটি আমাদের বিজয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা চূড়ান্ত লড়াই পর্যন্ত আছি। আমরা একটি কল্যাণ রাষ্ট্র করতে চাই। সংবিধান পরিবর্তন হবে, আইন পাল্টানো হবে, মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। এই দুঃশাসনকে ঘাড় থেকে নামাতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে। আমরা এই দেশ, জনগণের ভাগ্য, অর্থনীতি সব বদলে দেব।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, এই সরকার হচ্ছে শ্রমিক, মজুর মেহনতি মানুষের রক্ত চুষে নেওয়ার সরকার। মানুষের ভোট কেড়ে নেওয়ার সরকার। নাগরিকদের নিরাপত্তা ও পুরো দেশের নিরাপত্তা কোথায় তা উপলব্ধি করতে হবে। এই সরকার কাদের সরকার তা পরিষ্কার হয়ে গেছে। ভারতের স্বার্থ রক্ষার জন্য এই সরকার। 

প্রতিটি থানায় ইউনিয়নে গণতন্ত্র মঞ্চ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মঞ্চের ছয়টি দলের প্রত্যেকটিকে সংগঠিত করুন। নিজেদের মধ্যে দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলুন। কারণ মঞ্চ এবার তুমুল লড়াই শুরু করেছে। মঞ্চ এবার বলেছে, এই শাসকরা ৫৩ বছর ধরে যে অবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, তাতে রাষ্ট্র এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এই রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান বিপর্যস্ত।

সভায় নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এই ছয়টি দলের নেতারা অংশ নেন। 

ভাসানী অনুসারী পরিষদের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি মাহবুবে আলম জুয়েলের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম,  জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক প্রমুখ।

আরএআর