থানায় আ.লীগ নেতাকর্মীদের হামলা, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ৩০
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মুস্তাক শিকদার নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে আটকের ঘটনায় থানা ঘেরাও, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। হামলাকারীদের ইটের আঘাত ও পুলিশের গুলি বর্ষণে পুলিশসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।
রোববার (৯ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শৈলকুপা থানায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ১১ জন মুস্তাক শিকদারের সমর্থক। তাদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে আটক করে কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
রোববার রাত ৮টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সোহেল রানা ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি সোহেল রানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, শৈলকুপা থানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ও হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। হামলাকারীরা আহত হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হলে তাদের ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন তারা। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন
আটকরা হলেন শৈলকুপা উপজেলার শৈলকুপা গ্রামের মৃত লুতফর রহমানের ছেলে আব্দুল আজিজ (৬০), ধাওড়া গ্রামের আরিফ শিকদারের ছেলে আলী আকবর (১৯), মৃত তফসের আলীর ছেলে ছালামত (৭০), মনিরুল ইসলামের ছেলে জান্নাত হোসেন (২৬), আলী হাসানের ছেলে মোহিম শিকদার (১৬), বাইজিদ শেখের ছেলে রাজিবুল হাসান (১৮), কাশেম শিকদারের ছেলে ফিরোজ শিকদার (২৮), আব্দুল জলিলের ছেলে আব্দুল ওহাব (৫০), আলমের ছেলে হারুন শিকদার (৩৫), বায়েজিদ শিকদারের ছেলে রাজু শিকদার (১৯)।
জানা যায়, আজ রোববার দুপুরে উপজেলার ধাওড়া গ্রামের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মুস্তাক শিকদারকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর শত শত লোক থানা ঘেরাও করে। তারা থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশও রাবার বুলেট ছুড়ে। এতে পুরো থানা চত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে চলে হামলা-পাল্টা হামলা। এতে পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয় বেশ কয়েকজন। আহতদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকারের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. ইকবাল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শৈলকুপা থেকে আহত অবস্থায় মোট ১২ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে ফিরোজ শিকদার (৩০) নামে একজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। বাকি ১১ জন হাসপাতালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা শঙ্কামুক্ত।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুলিশ এজাহারভুক্ত একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। এর জেরে আকস্মিকভাবে থানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। আকস্মিক এই হামলায় পুলিশের ৫-৬ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। দুজনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। পুলিশ পেশাদারিত্বের সঙ্গে হামলাকারীদের মোকাবিলা করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যারা হামলার সঙ্গে যুক্ত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
রাজু আহমেদ/এএএ