বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় কলেজপড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় তার দুই ভাইকে ছুরিকাঘাতে আহত করার অভিযোগ উঠেছে সুজন নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া সম্প্রতি শেষ হওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যানপ্রার্থীর সমর্থন নিয়েও ভুক্তভোগী দুই ভাইয়ের সঙ্গে অভিযুক্ত সুজনের বিরোধ চলছিল।

রোববার (১৬ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের কামার হাট নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ছুরিকাঘাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কালমেঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম নাছির।

আহত দুই ভাই হলেন- হাসান ও আব্দুল্লাহ মুবিন। তারা কালমেঘা ইউনিয়নের কামার হাট এলাকার বাসিন্দা ফজলুল হক খানের ছেলে। আর অভিযুক্ত সুজন একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হানিফ মিয়ার ছেলে। আহতদের মধ্যে আব্দুল্লাহ মুবিনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কালমেঘা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত সুজন পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যানপ্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার কাজ করেন। অপরদিকে ভুক্তভোগী হাসান ও আব্দুল্লাহ মুবিন বর্তমান নির্বাচিত দোয়াত-কলম প্রতীকের চেয়ারম্যানপ্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। ওই সময় থেকেই উভয় পক্ষের মধ্যে নির্বাচনে সমর্থন নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। পরে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে অভিযুক্ত সুজন ভুক্তভোগীদের কলেজপড়ুয়া বোনকে রাস্তাঘাটে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে ওই কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীর ভাই আব্দুল্লাহ মুবিনের পিঠে ছুরি ঢুকিয়ে দেয় সুজন। এ সময় আব্দুল্লাহ মুবিনকে বাঁচাতে তার বড় ভাই হাসান ছুটে গেলে তাকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যান সুজন। পরে আহত অবস্থায় স্থানীয়রা হাসান ও আব্দুল্লাহ মুবিনকে উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে আব্দুল্লাহ মুবিনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

উত্ত্যক্তের শিকার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, কিছু দিন ধরেই রাস্তাঘাট দিয়ে যাওয়া-আসার সময়ে সুজন বিভিন্নভাবে ইশারা-ইঙ্গিতে আমাকে উত্ত্যক্ত করতেন। তবে তিনি কখনো মুখে কিছু বলেননি। এ ছাড়া আমার শরীর ঘেঁষে মোটরসাইকেল চালিয়ে ভয়ভীতি দেখাতেন। বিষয়টি সকালে মায়ের কাছে বললে সন্ধ্যার পর আমার ভাইদের ওপর ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে।

কালমেঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম নাছির বলেন, ছুরিকাঘাতে দুজনকে আহতের বিষয়টি আমি জেনেছি। অভিযুক্ত সুজন আসলেই খারাপ প্রকৃতির লোক।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল মামুন বলেন, ছুরিকাঘাতের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশ রাত থেকেই কাজ শুরু করেছে। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ জানায়নি।

মো. আব্দুল আলীম/এমজেইউ