তিন সন্তান প্রসবে ঘরজুড়ে আলো, তবু মনে দুশ্চিন্তা
ফেনীতে একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন হোসনে আরা নামে এক প্রসূতি। মঙ্গলবার (১৮ জুন) বেলা ১১টার দিকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান জন্ম দেন তিনি। এতে ঘরজুড়ে আলো হলেও দরিদ্র পরিবারে সন্তানদের ভরণপোষণ নিয়ে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা।
গৃহবধূ হোসনে আরা জেলার সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের সুলাখালী গ্রামের জিয়া উদ্দিনের স্ত্রী। স্বামী জিয়া উদ্দিন পেশায় টাইলস মিস্ত্রি।
বিজ্ঞাপন
নবজাতকের বাবা জিয়া উদ্দিন বলেন, এলাকায় টাইলস মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করি। যেদিন কাজ থাকে সেদিন টাকা পাই। যখন কাজ থাকে না তখন বসে থাকি। পরিবারে এক ছেলে ও দুই মেয়ের পর আজকে একসঙ্গে আবার তিন সন্তানের আগমনে খুশি হয়েছি। তবে তাদের লালনপালন কীভাবে করবো সেই চিন্তায় আছি। সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা পেলে আমার জন্য অনেক উপকার হবে।
গৃহবধূ হোসনে আরা বলেন, আমার স্বামী দিনমজুরের কাজ করে কোনোমতে পরিবারের ভরণপোষণ করেন। এখন একসঙ্গে তিন শিশুর খরচ মেটানো তার জন্য অনেক কষ্টকর হয়ে যাবে। সন্তানদের লালন পালনে সরকারি বেসরকারি সহযোগিতা চান তিনি।
বিজ্ঞাপন
হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শান্তা মজুমদার বলেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই গৃহবধূ হাসপাতালে ভর্তি হন। তারা সোনাগাজীর গ্লোবাল হেলথ মেডিকেল সেন্টার নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত ২১ মে একটি আলট্রা করায়। যেখানে রিপোর্টে দুইজন যমজ শিশুর কথা উল্লেখ ছিল। কিন্তু আজ প্রসূতি হাসপাতালে আসলে সিনিয়র স্টাফ নার্স কল্পনা মণ্ডলের তত্ত্বাবধানে নরমাল ডেলিভারিতে দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে মা ও নবজাতকেরা সুস্থ আছেন।
ভুল রিপোর্টের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত গ্লোবাল হেলথ মেডিকেল সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সাড়া মেলেনি।
এ ব্যাপারে সোনাগাজীর মতিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রবিউজ্জামান বাবু বলেন, একসঙ্গে তিন সন্তান প্রসবের বিষয়টি শুনেছি। নবজাতকদের লালন-পালনে কোনো ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন হলে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, নবজাতকের সুরক্ষায় উপজেলা পরিষদ থেকে সরকারি বিভিন্ন সেবা দেওয়া হয়। ওই দম্পতি আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে তাদের অবশ্যই সহায়তা করবো। এছাড়া ভুল রিপোর্টের বিষয়ে অভিযুক্ত ওই প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপারেও খতিয়ে দেখা হবে।
তারেক চৌধুরী/এমএ