কুড়িগ্রামে রোববার (৪ আগস্ট) ঘোষপাড়ায় দুপুর ১২টা দিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শহীদ মিনার এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে।

অন্যদিকে শহীদ মিনার ও দাদামোড় সড়কে অবস্থান নিয়ে পাল্টা ধাওয়া দিতে থাকে আন্দোলনকারীরা। চলতে থাকে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে দফায় দফায় কাঁদানে গ্যাস ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।

এভাবে দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলার পর এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা দুই দিক থেকে আওয়ামী লীগ অফিস ঘিরে ফেলে। এ সময় ছাত্রলীগ নেতারা পালিয়ে গেলেও জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা কার্যালয়ে আটকা পড়ে যায়। একপর্যায়ে দলীয় কার্যালয়ে দরজা ভেঙে আন্দোলনকারীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: জাফর আলী, সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মন্জু, পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মন্জুরুল ইসলাম রতন, সাংগাঠনিক সম্পাদক, রাশেদুজ্জামান বাবু, রেদওয়ানুল হক দুলাল, রুহুল আমিন দুলালসহ অন্যান্য নেতাদের পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে কার্যালয়ে আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা।

সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ নেতা, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়ে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে গুরুত্বর আহত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলী, সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মন্জু, পৌর চেয়ারম্যান কাজিউল ইসলামসহ উপজেলা চেয়ারম্যান মন্জুরুল ইসলাম রতনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিস শাহিনুর রহমান শিপন জানায়, আহতরা দুপুরের পর থেকে হাসপাতালে আসতে শুরু করে। এদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষার্থী, পুলিশ রয়েছে। গুরুত্বর আহতদের রংপুর মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়েছে।

অন্যদিকে দুপুরের পর থেকে জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা শহরে বিক্ষোভ শুরু করে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা ভবন ভাঙচুরের পর থানা ঘেরাও করে। ফুলবাড়ীতে অন্তত ৮টি ও কুড়িগ্রাম জেলা শহরে ৪টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে কুড়িগ্রামে কর্মরত দীপ্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি ইউনুছ আলী, ঢাকা পোস্ট ও দেশ রুপান্তরের জেলা প্রতিনিধি জুয়েল রানার ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। 

জুয়েল রানা/আরকে