নওগাঁয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয় সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার শহরের মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে হাজারো শিক্ষার্থীর পাশাপাশি অংশ নেয় অভিভাবক ও শিক্ষকরাও।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বিজয়ের আনন্দ উদযাপনে মেতে ওঠে। রং তুলিতে একে অপরের গালে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অঙ্কনে ব্যস্ত হয়ে ওঠে অনেকেই। অভিভাবকরা উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীদের মিষ্টি মুখ করান। পরে শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতসহ বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন শিক্ষার্থীরা।

এ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী প্রিতী বলেন, আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ অবধি নওগাঁর মাঠে থেকেছি। অবশেষে আমাদের হাজারো ভাই-বোনের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জনে সক্ষম হয়েছি। এই স্বাধীনতা জনগণ কীভাবে নিচ্ছে এবার সেটাই দেখবার বিষয়। আমরা একটি সুন্দর সুশৃঙ্খল দেশ চাই।

আরেক শিক্ষার্থী নাকিব আল হাসান বলেন, রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ স্বাধীনতা। এখন থেকে দেশের প্রতিটা নাগরিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। একজন রাষ্ট্র প্রধানকে আলোচনা সমালোচনা দুটোকেই প্রাধান্য দিতে হয়। যেটা শেখ হাসিনা করেননি। ইতিহাসের পাতায় এ দেশের নিকৃষ্টতম স্বৈরাচারী শাসক হিসেবে তার নাম রয়ে যাবে।

নওগাঁয় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক আরমান হোসেন বলেন, বিজয়ের আনন্দ উপভোগ করতে এই সমাবেশের আয়োজন। এর মধ্য দিয়ে আমরা ‘রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রাখা, প্রতিশোধের রাজনীতি পরিহার করে ক্ষমা ও মানবিক মূল্যবোধের পথ অবলম্বনসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জীবন, সম্পত্তি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষায় সবাই একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছি। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রীয় মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতায় সংগঠিত সব হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচার নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়েছে।

এদিকে শহীদ মিনারে এ কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর দুপুর ১টার দিকে পার্শ্ববর্তী নওজোয়ান মাঠে সারা দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় শিক্ষার্থী ছাড়াও সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করে।

আরমান হোসেন রুমন/এমএ