রাজবাড়ীতে রাস্তায় নেই ট্রাফিক পুলিশ, সিগন্যালে শিক্ষার্থীরা
সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে পড়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর রাজবাড়ীতে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে রাজবাড়ীর সর্বস্তরের জনগণ। এ সময় শহরজুড়ে বিশৃঙ্খলায় ময়লা আবর্জনা সৃষ্টি হয়। সেই সব ময়লা আবর্জনা নিজ হাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার পর বড়পুল মোড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় নামে। শুধু তাই নয়, তারা একই সঙ্গে পুলিশের অনুপস্থিতিতে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছেন।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকাল ৯টার দিকে শহরের বড়পুল মোড়ে অবস্থান নেন। সবাই একসঙ্গে জমায়েত হয়ে একটি টিম বড়পুল মোড়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে অন্যান্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা বড়পুল মোড় থেকে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা শুরু করতে করতে তারা পান্নাচত্বর হয়ে রেলগেটের দিকে যেতে থাকে।এ সময় কারোর হাতে প্লাস্টিকের ঝুড়ি, কারোর হাতে ঝাড়ু, কারোর হাতে বেলচা ও কোদাল দেখা যায়। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে রোভার স্কাউটসের সদস্যরাও অংশ নেয়।
রাজবাড়ী সরকারি কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাজিব মোল্লা বলেন, আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সকল স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজবাড়ী শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় নেমেছি। আমরা একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শহর রাজবাড়ীবাসীকে উপহার দেব।
বিজ্ঞাপন
রাজবাড়ী সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী রাজিয়া সুলতানা বলেন, রাজবাড়ী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলছে। আমরা রাজবাড়ীতে সকল শিক্ষার্থীরা মিলে এক হয়ে এই কাজে নেমেছি। আমাদের এই কাজ অব্যাহত থাকবে।
ডা. আবুল হোসেন কলেজের রোভার স্কাউটসের সদস্য সাঈদুল বলেন, ডা. আবুল হোসেন কলেজ ও সরকারি টেকনিক্যাল স্কুলের ২০/২৫ জন রোভার স্কাউটসের সদস্যরা আমরা মাঠে নেমেছি। রাজবাড়ীর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে যে কাজগুলো করতো আমরা সেই কাজগুলো করছি। যতদিন পুলিশের কর্মবিরতি শেষ না হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আমাদের এই কার্যক্রমে আমরা সাধারণ মানুষের বাহবা পাচ্ছি।
রাজবাড়ী শহরের বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মোহাব্বত হোসেন রোমান বলেন, আমাদের রাজবাড়ী জেলায় কোনো সমন্বয়ক নেই। আমরা শুরু থেকেই সকলে একত্রে হয়ে কাজ করেছি। এখন আমরা সকলে মিলে একত্রে শহরটাকে পরিষ্কার করছি। এছাড়া যারা এই আন্দোলনে আহত হয়েছে ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের বাড়িতে বাড়িতে যাব ও আমাদের সাধ্যমত তাদেরকে আর্থিকভাবে সহায়তা করব।
মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/রাজবাড়ী