চার দিনের মাথায় ফের অপারেশন, মৃত্যুশয্যায় প্রসূতি
কুমিল্লায় সিজারের সময় নাহিদা আক্তার নামে এক প্রসূতির ভুল চিকিৎসা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নগরীর আলিফ হসপিটাল নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চার দিনের মাথায় দ্বিতীয়বারের মতো ওই প্রসূতির অপারেশন করা হয়েছে। চার দিনের মাথায় দুইবার অপারেশন করায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন ওই প্রসূতি।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে দ্বিতীয় বারের মতো অপারেশন করা হয় নাহিদা আক্তারের। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাতে তার সিজারের অপারেশন করা হয়। ঘটনাটি কুমিল্লা নগরীর টমছম ব্রিজের উত্তর পাশে লাকসাম রোডের আলিফ হসপিটালে ঘটেছে।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী নাহিদা আক্তার জেলার লালমাই উপজেলার কেশনপাড় এলাকার ফাহিম হোসেনের স্ত্রী।
রোববার রাতে নাহিদার স্বজনরা ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) প্রসব বেদনা ওঠে নাহিদার। এ সময় পূর্ব পরিচিত মনোরঞ্জন নামে এক ওয়ার্ড বয়ের পরামর্শে নাহিদাকে আলিফ হসপিটালে ভর্তি করা হয়। পরে ওইদিন রাতে সিজারের মাধ্যমে ফুটফুটে একটি শিশুর জন্ম দেন নাহিদা। সিজার করান ওই হাসপাতালের সার্জন ডা. গাজী সালাউদ্দিন।
বিজ্ঞাপন
সিজারের পর সেলাই দিয়ে নাহিদাকে বেডে স্থানান্তর করা হয়। অপারেশনের পর থেকেই নাহিদার প্রস্রাব এবং পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে পেট ফুলে যায়। রোববার সকাল পর্যন্ত তার প্রস্রাব-পায়খানা না হওয়া এবং পেট ফুলে যাওয়া নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদার স্বজনরা। এ সময় চিকিৎসক টমছম ব্রিজ ল্যাব এইডে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার পরামর্শ দেন। পরে নাহিদাকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে পেটের ভেতর কিছু রয়ে গেছে বলে জানান ল্যাব এইডের চিকিৎসক। দ্রুত তার অপারেশনের পরামর্শ দেন। পরে রাত ৯টার দিকে অপারেশন করা হয় নাহিদার। তবে দ্বিতীয় অপারেশনে শুধু পেটে রক্তজমাট বাঁধা ছিল বলে নাহিদার এ পরিস্থিতি হয়েছে বলে জানানো হয় স্বজনদের।
নাহিদার স্বামী ফাহিম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার স্ত্রীর অবস্থা ভালো নয়। চারদিনের মাথায় দুইটা অপারেশন হয়েছে। সে এখন মৃত্যুশয্যায়। বাচ্চাটা অনেক কান্নাকাটি করে সব সময়। এটা কেমন হাসপাতাল?
এ বিষয়ে জানতে ডা. গাজী সালাউদ্দিনকে ফোন করা হলে তিনি আরেকটি অপারেশনে ব্যস্ত আছেন বলে কল কেটে দেন।
আলিফ হসপিটালের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল সুজন ঢাকা পোস্টকে বলেন, একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক সিজার করেছেন। পেটে পানি এবং রক্ত থাকায় আবার অপারেশন করতে হয়েছে। তবে রোগী এখন সুস্থ হওয়ার দিকে।
কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ নাজমুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়টি এখনই জানলাম। খোঁজ নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতালটির অনুমোদন রয়েছে। রোগীর স্বজনরা লিখিত অভিযোগ করলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।
আরিফ আজগর/আরএআর