বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে অবৈধ পথে ছেলেদের বিদেশ পাঠাতে চেয়েছিলেন দর্জি দোকানি আজগর বেপারী। কিন্তু অবৈধপথে ছেলেরা বিদেশ যেতে না পারায় ঋণমুক্ত হতে পারেননি তিনি। এরপর ঋণ থেকে মুক্ত হতে বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঘড়িষার ইউনিয়নের বাহের কুশিয়া গ্রামে নিহতের বাড়ির পাশের বাগানে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিহত আজগর বেপারী বাহের কুশিয়া গ্রামের মৃত কালাচান বেপারীর ছেলে ও ঘড়িষার বাজারের দর্জি দোকানি ছিলেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সংসারের অভাব দূর করতে দুই ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর উদ্দেশ্য কয়েকটি এনজিও থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করে আজগর বেপারী। কিন্তু ছেলেদের অবৈধপথে বিদেশ পাঠাতে গিয়ে ব্যর্থ হোন তিনি৷ 

এরপর এনজিওর কিস্তি পরিশোধ করতে গিয়ে আরও ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েন আজগর। স্থানীয় ঘড়িষার বাজারে সামান্য দর্জি দোকানের আয় থেকে সংসারের খরচ মেটানোই কঠিন, সেখানে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা আজগরের জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে পরে। প্রতিদিন কিস্তির টাকা যোগাড় করতে না পেরে তিনি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। শনিবার ৫০ হাজার টাকা কিস্তি পরিশোধ করার কথা থাকলেও সেই টাকা কোনোভাবেই যোগাড় করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।

আজগর বেপারীর ছেলে দিপু বেপারী বলেন, গতকাল দুপুরে খাবার খেয়ে বাবা বাড়ি থেকে বের হন। রাতে বাসায় না ফেরায় আমরা ভেবেছিলাম তিনি পাশের গ্রামের মেলায় গিয়েছেন। কিন্তু সকালে খবর পাই বাড়ির পেছনের বাগানে তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে।

নড়িয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আবির হোসেন বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আজগর বেপারী ঋণের চাপে ছিলেন। ঋণের বোঝা সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাইফ রুদাদ/এমএসএ