ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, নির্বাচন চায় না এমন কোনো রাজনৈতিক দল নেই। আমরা সবাই নির্বাচন চাই। কিন্তু নির্বাচন কবে দেবেন, কালকেই? আগামীকাল যদি নির্বাচন হয় তাহলে কি সুষ্ঠু হবে? অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে? লাভটা কি? সংস্কার করার আগে নির্বাচন দিলে সেই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হবে না এমন উদ্বেগ জানিয়ে ফয়জুল করীম বলেন, মানুষ ভোট প্রয়োগ করতে পারবে না। আবারও দখলদারি, চাঁদাবাজি, কালো টাকার ছড়াছড়ি হবে। এমন নির্বাচনের জন্য আমরা আন্দোলন করিনি।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরীর শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত জেলা ও মহানগরের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সৃষ্ট বাংলাদেশে বিএনপির নেতাদের বক্তব্য দেওয়ার সময় আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ফয়জুল করীম বলেন, মানবতার জন্য ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সবার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে রাজি আছে।

নারায়ণগঞ্জের একটি স্থানীয় পত্রিকায় ‘বিএনপির তাণ্ডব ও জমি দখলে’র শিরোনাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই কারণে রক্ত দিয়েছিলাম? এই কারণে আবু সাঈদ, মুগ্ধরা জীবন দিয়েছিলেন? থানার মধ্যে মিথ্যা মামলার পাহাড়। এই মিথ্যা পাহাড়ের জন্য আন্দোলন করেছিলাম? এ জন্য কেউ আন্দোলন করেনি।

বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বিএনপি কেন যে ছাত্রদের থেকে আলাদা হচ্ছে জানি না। বিএনপির ইদানীং বক্তব্যের সঙ্গে আগের বক্তব্যের মিল নেই। তারা আমাদেরও ফ্যাসিস্টদের সহযোগী ঘোষণা দিয়েছে। আমি বলতে চাই, আওয়ামী লীগের বিতর্কিত জাতীয় কোনো নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন অংশগ্রহণ করেনি। জাতীয় নির্বাচন এবং স্থানীয় নির্বাচনকে কখনো এক মনে করি না।

ফয়জুল করীম বলেন, কোনো বিদেশি শক্তি যদি দেশের ওপর আঙুল তুলে তাহলে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করা হবে।

জামায়াতে ইসলামী প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এই নেতা বলেন, ইসলামী আন্দোলন চলে ঐক্যের ভিত্তিতে। ইসলামী আন্দোলন দেশ ও মানবতার জন্য ঐক্য করতে রাজি। জামায়াতের আমির চরমোনাই গিয়েছিলেন অফিসিয়ালভাবে নয়। বরিশালে উনার প্রোগ্রাম ছিল। সেই প্রোগ্রামে যাওয়ার পথে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য চরমোনাই গিয়েছিলেন। যেহেতু তিনি একজন মেহমান, আমরা সেই হিসেবে শ্রদ্ধা-সম্মান ও আতিথেয়তা যতটুকু করার সেটার চেষ্টা করেছি। এখানে রাজনৈতিক কোনো আলোচনা হয়নি।

ইসলামী আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মাওলানা দ্বীন ইসলামের সভাপতিত্বে সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম ছাড়াও ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মুহাম্মাদ মাসুম বিল্লাহসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে জেলা ও মহানগরের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।

মেহেদী হাসান সৈকত/এমজেইউ