বগুড়ার শাপলা মার্কেটে পুরোনো যন্ত্রপাতির জমজমাট কারবার
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির সংযোজন ঘটেছে। চাষাবাদ, শস্য মাড়াই, সংরক্ষণ—সব কিছুতেই লেগেছে যন্ত্রপাতির আধুনিকতার ছোঁয়া। তবে এসব যন্ত্রপাতি বিকল হলে ছুটতে হচ্ছে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে। ব্রান্ডের নতুন যন্ত্র পাওয়া না গেলে একমাত্র ভরসা পুরোনো যন্ত্রপাতির মার্কেট। তাই তো উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ কৃষি যন্ত্রাংশ কিনতে ছুটে আসে বগুড়ার ভাংরি পট্টিখ্যাত শাপলা মার্কেটে।
প্রতিমাসে প্রায় ৩ থেকে ৫ কোটি টাকার বেচাকেনা হয় এই মার্কেটে। পাওয়ার টিলারের ২৪ ফাল ও ২৮ ফালের পেনিয়ামসহ টিলার কিনবা সেলো মেশিনের বেশ কিছু যন্ত্রাংশ নতুন কিনতে পাওয়া যায় না। সে কারণে বাধ্য হয়েই কিনতে হয় পুরোনো যন্ত্রাংশ। তা ছাড়া স্থানীয়ভাবে তৈরি যন্ত্রাংশ ও নকল যন্ত্রাংশের ভিড়ে ক্রেতারা আস্থা রাখছেন পুরনো যন্ত্রাংশের ওপরেই।
বিজ্ঞাপন
মানিক মিয়া, সেলো মেশিনের লাইনার কিনতে ধনুট থেকে এসেছেন বগুড়ার শাপলা মার্কেটে। পুরনো মেশিনারিজ বিক্রি ও পুরোনো যন্ত্রাংশ কিনে সেলো মেশিনে ব্যবহার করেন তিনি। তিনি জানান, কৃষি যন্ত্রপাতির যন্ত্রাংশ কিনতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মার্কেটে ছোটাছুটি করেছেন কিন্তু এই মর্কেটে এসে মিলেছে সব ধরনের যন্ত্রাংশ। তাই ছুটতে হচ্ছে না অন্য কোথাও। তাইতো পুরনো হলেও মানসম্মত যন্ত্রাংশ কিনতে পারায় খুশি এই মার্কেটে আসা বেশিরভাগ ক্রেতা।
শাপলা মার্কেটের পুরোনো দোকান তানভির এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোস্তাফিজুর রহমান রুস্তম বলেন, কৃষি যন্ত্রপাতির ১টি দোকান দিয়ে ১৯৯৩ সালে যাত্রা শুরু করা এই মার্কেটিতে প্রায় ৭০টি দোকান রয়েছে। উত্তরবঙ্গের চাহিদা মিটিয়ে এই মার্কেটের যন্ত্রপাতি যাচ্ছে ঢাকাসহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়।
বিজ্ঞাপন
এখানকার ব্যবসায়ীরা মূলত বিকল হওয়া পাওয়ার টিলার আর সেলো মেশিন কিনে তার সচল যন্ত্রাংশ খুলে ধুয়ে-মুছে পুরোনো যন্ত্রাংশের নতুন রূপ দেন। একইসঙ্গে লোহার টুংটাং শব্দে মুখরিত এই মার্কেটিতে কমদামে ভালো জিনিস পাওয়ার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশের আনাচে-কানাচে।
এদিকে বগুড়া বিসিক উপমহাব্যবস্থাপক এ কে এম মাহফুজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশের কৃষিতে ভাঙ্গারি পট্টির ব্যাবসায়ীদের অবদানও কম নয়। উত্তরের কৃষকদের পুরোনো কৃষি যন্ত্রপাতি সহজে ক্রয়-বিক্রয়ের অন্যতম এক ব্যবসা গড়ে উঠেছে এখানে। তাই এখানকার ব্যবসার প্রসার ঘটাতে ব্যবসায়ীদের মূলধন বাড়াতে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়াসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
এএমকে