যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন বলেছেন, গত ১৬ বছর পর্যন্ত ধারাবাহিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি এজন্য নেতৃত্ব দেননি যে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আমি-আপনি চাঁদাবাজি করব, দখলদারিত্ব করব, লুটতরাজ করব কিংবা সমাজে বিভিন্ন রকমের ফ্যাসাদ তৈরি করব।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপি ও বিএনপির বিভিন্ন সহযোগী অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে এক চরফ্যাশন উপজেলা শহরের গণসংবর্ধনায় উপস্থিত হয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য এসব কথা বলেন তিনি। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করার জন্য তারেক রহমান তার নিজের জীবনকে বাজি রেখেছেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবন ও পারিবারিক জীবনকে দেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের কমিটমেন্ট সাম্য মানবিক মর্যাদা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য তিনি লড়াই করেছেন।

নূরুল ইসলাম নয়ন বলেন, বাংলাদেশে গত ১৬ বছর একটি পার্লামেন্ট ছিল কিন্তু কোনো পার্লামেন্টারি কার্যক্রম ছিল না। নির্বাচন কমিশন ছিল, ভোটাধিকার ছিল না। আইন আদালত ছিল, ন্যায়বিচার ছিল না। বরং আদালতের এজলাসে দাঁড়িয়ে থাকা বিচারপ্রার্থীর রায় হতো তার রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনায়। প্রশাসন ছিল কিন্তু কোনো নিরপেক্ষতা ছিল না। র‍্যাব পুলিশের আতংকে মানুষের গাঁ থেকে নিরাপত্তার চাদর খসে পড়েছিল। গুম, খুন, হত্যা, মামলা সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছিল। এসব থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দেওয়ার জন্যই তারেক রহমান তার জীবনকে বাজি রেখেছেন, জীবনকে উৎসর্গ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি বাংলাদেশ থেকে নিশ্চয়ই পালিয়ে যায়নি। তারা বাংলাদেশেই রয়েছে কারণ বিএনপি নেতাকর্মীরা কোনো অন্যায় করেনি। শুধু রাষ্ট্রের অন্যায় আচরণের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছিল। তারা শুধু রাষ্ট্রের কাছে দাবি জানিয়েছিল একটি স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার জন্য। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে, যাতে দেশের মানুষ তার পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে সেজন্য আমার সংগ্রাম ও লড়াই।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য নূরুল ইসলাম নয়ন বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন, সমাজে কোনো বিশৃঙ্খলা, অন্যায়, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মানুষের সম্পদ লুট করেননি তাদের প্রতি আমাদের কোনো দাবি নেই। কিন্তু যেসব আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী মানুষের সম্পদ দখল, লুটপাট, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করেছে, বিনা কারণে বিএনপি নেতাকর্মীদের মামলা হামলা ও পঙ্গু করেছে আইনগতভাবে তারা তাদের অন্যায়ের শাস্তি পাবেন।

আমরা আশা করি, বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর অনতিবিলম্বে একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ইনশাআল্লাহ হবে। ‘জনগণের ভালোবাসার ম্যান্ডেট নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে।’ 

উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, যেসব আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আপনাদের ওপর অন্যায়, অত্যাচার ও অবিচার করেছে তাদের আইনের হাতে তুলে দেবেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।

গণসংর্বধনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- ভোলা জেলা বিএনপি সদস্য সচিব রাইসুল আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মো. রাসেল মাহমুদ। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান কিরণ, মো. কবির হোসেন, সদস্য ইয়ারুল আলম লিটন, তরিকুল ইসলাম কায়েদ। বরিশাল মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. তসলিম, ভোলা জেলা যুবদলের সভাপতি জামাল উদ্দিন লিটন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের সেলিম। চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপি সাবেক সহসভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন টিপুসহ অনেকে।

মো. খাইরুল ইসলাম/এমএন