নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে পৌরসভার ওছখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে, রাত ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিসহ মানুষজন ওছখালী বাজারে জড়ো হন। সেখান থেকে একটি মিছিল নিয়ে তারা মোহাম্মদ আলীর বাড়ির দিকে রওনা দেন। তারা ভাঙচুরের জন্য এগিয়ে আসতে চাইলে স্থানীয় বাসিন্দা ও সমর্থকরা জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানান। এ সময় সেখানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গত বছরের ১০ আগস্ট রাত ৩টার দিকে উপজেলার ওছখালীর নিজ বাসভবন থেকে মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী সাবেক এমপি আয়েশা ফেরদাউস ও তাদের বড় ছেলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশিক আলী অমিকে হেফাজতে নেয় নৌবাহিনী। তারপর ১২ আগস্ট থেকে স্ত্রী-ছেলেসহ কারাগারে আছেন হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী।

তারেক হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ফ্যাসিস্ট পালিয়ে গেলেও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে নেই। ছাত্র-জনতা বেঁচে থাকতে এ দেশে আর ফ্যাসিবাদের উত্থান হতে দেবে না। আগামীতে এসব দেখে যেন নতুন কোনো ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর উত্থান না হয় সেজন্য এমন কর্মসূচি।

মো. বিপ্লব উদ্দিন হাতিয়ার এক বাসিন্দা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের ছাত্র-জনতার ওপর মোহাম্মদ আলীর সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ করেছে। পতিত ফ্যাসিস্টের গুন্ডারা হাতিয়া ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করার সাহস পায় কীভাবে? ওরা কি দেখে না সারা দেশে কি হচ্ছে? এদিকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অস্ত্রধারী নৌবাহিনীকে বলা হলো ছাত্র-জনতাকে সেইফ করতে। নৌবাহিনী বলে তাদের নিরাপত্তা কে দেবে? এরপর ছাত্র-জনতা ফ্যাসিস্ট মোহাম্মদ আলীর বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়।

মো. মেশকাত হোসেন নামের আরেক স্থানীয় বাসিন্দা ঢাকা পোস্টকে বলেন, দফায় দফায় বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ করার চেষ্টা করে ছাত্র-জনতা। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে রাত ২টার দিকে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

মোহাম্মদ আলীর ছোট ছেলে মাহতাব আলী অদ্রি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বাবা-মা-ভাই জেলে আছেন। আমাদের বাড়িতে কেউই নেই। আমাদের বাড়িতে আক্রমণ হতে পারে, এমন কথা আমি শুনেছিলাম। আজকে হামলা করতে আসলে সাধারণ মানুষ তাদের ধাওয়া করে। কোথাও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। যে বা যারা এসব নিয়ে মিথ্যা কথা বলছেন তারা হাতিয়ার ভালো চান না। আমরা চাই মানুষ ন্যায়বিচার পাক। আমাদের পরিবারের সবাই জেলে থাকার পরও আমাদের বাড়িতে এভাবে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।

এ বিষয়ে জানতে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজমল হুদাকে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 হাসিব আল আমিন/এএমকে