পটুয়াখালী পৌরসভার স্বনির্ভর সড়কের চরপাড়া এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে ১২টি বসতঘরসহ মোট ১৬টি স্থাপনা পুড়ে গেছে। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় বিকেল ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নেভানোর কাজে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্য ও স্থানীয় ছাত্রদলের কর্মীরা সহায়তা করেন। 

এদিকে ভয়াবহ এ আগুন দেখতে হাজারো উৎসুক জনতা ভিড় করে। যার ফলে ফায়ার সার্ভিসের কাজ ব্যাহত হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা জনতাকে সরিয়ে দেওয়ার কাজ করেন।

এ ঘটনায় আগুন নেভাতে গিয়ে তিনজন আহত হয়েছেন। তারা হলেন- সদর ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার মো. কামরুজ্জামান, জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ইউডিআরটি মেম্বার মো. শাহরিয়ার রহমান আকাশ এবং মো. শহিদুল ইসলাম (২২)। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) যাদব সরকার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফফাত আরা জামান উর্মী এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দেবনাথ।

এছাড়াও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ চুন্নি মিয়া, সদস্য সচিব স্নেহাশু সরকার কুট্টি, জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম আরিফ, জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব জাকারিয়া আহমেদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত জাহানারা বেগম (৬০) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ঘরের সামনেই একটা চায়ের দোকান ছিল। দোকানের আয় দিয়েই চলত সংসার। এখন সব পুড়ে শেষ হয়ে গেল। কীভাবে বাঁচব?’

আরেক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি খায়রুল আহমেদ (৩৮) বলেন, আমার ঘর আর ব্যবসার মালামাল সব পুড়ে গেছে। এখন আমি নিঃস্ব। কীভাবে আবার ঘুরে দাঁড়াব জানি না।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাশু সরকার কুট্টি বলেন,আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে আছি এবং তাদের সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।

পটুয়াখালী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তফা মোহসীন বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সকল ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ১৬ জন ক্ষতিগ্রস্তের তথ্য পাওয়া গেছে।

জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের কাজ চলছে।

প্রাথমিকভাবে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে কিছু জানা না গেলেও, তদন্ত শেষে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

রায়হান/আরএআর