১০ দিন পর সেই ছাগল ফেরত পেলেন সাহারা বেগম
ছাগলের মালিক সাহারা বেগম
বগুড়ার আদমদীঘিতে সরকারি বাগানের ফুল গাছ খাওয়ার অপরাধে আটক সেই ছাগল ১০ দিন পর বৃহস্পতিবার (২৭ মে) বিকেলে মুক্তি পেয়েছে। আদমদীঘি উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজুর মধ্যস্থতায় ছাগলটি ছাড়িয়ে তার মালিক সাহারা বেগমের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ফুলের গাছ খাওয়ার অপরাধে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সীমা শারমিনের নির্দেশে গত ১৭ মে স্থানীয় এক নারীর পালিত ছাগল আটক এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা জরিমানার খবরটি দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়। এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিকেলে ছাগল মালিক আদমদীঘি উপজেলা সদরের বাসিন্দা সাহারা খাতুনকে ডেকে এনে আটক ছাগল ফেরত দেওয়া হয়।
ইউএনও সীমা শারমিন বলেন, বিকেলে সবার উপস্থিতিতে ছাগলটি ফেরত দেওয়া হয়েছে। আর জরিমানার টাকা যেহেতু ছাগল মালিক দিতে পারেননি তাই সে টাকা সরকারি কোষাগারে আমিই দিয়েছি। আসলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা তো সাথে সাথেই দিতে হয় তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে টাকাটা আমিই দিয়েছি।
বিজ্ঞাপন
মালিকের অনুপস্থিতে কীভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা করলেন? জবাবে ইউএনও বলেন, মোবাইল কোর্টে মালিক উপস্থিত ছিলেন। হয়তো তিনি বিষয়টি তখন বুঝতে পারেননি।
আদমদীঘি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু বলেন, সাহারা বেগম একাধিকবার অনুরোধ করায় আমি মধ্যস্থতা করেছি। ছাগল ফেরত দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আদমদীঘি উপজেলা হাসপাতালের পাশে তালশুন এলাকার অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য জিল্লুর রহমানের স্ত্রী সাহারা বেগম বাড়িতে ছাগল পালন করেন। তার একটি ছাগল গত ১৭ মে পার্শ্ববর্তী আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ চত্বরে ফুল বাগানে গিয়ে কয়েকটি গাছের পাতা খেয়ে ফেলে। বিষয়টি জানার পর ইউএনও সীমা শারমিন ওইদিন বেলা ১১টার দিকে নিরাপত্তা কর্মীদের মাধ্যমে ছাগলটি আটক করেন। এরপর তার মালিককে ডেকে আনতে বলা হয়।
ছাগল মালিক সাহরা খাতুনের অভিযোগ, খবর পেয়ে তিনি ইউএনও অফিসে গেলে তাকে জানানো হয় তার ছাগল উপজেলা পরিষদ চত্বরে লাগানো ফুল গাছ খেয়ে ফেলেছে। সেজন্য তার ছাগলকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত ২ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। জরিমানার ২ হাজার টাকা না দিলে ছাগল ফেরত দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, সেদিন অনেক অনুরোধ করার পরও ইউএনও ছাগল ফেরত দিতে রাজি হননি। এমনকি এরপর কয়েক দফা যোগাযোগ করা হলেও ছাগলটিকে ফেরত দেওয়া হয়নি।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ মে থেকে ওই ছাগলকে প্রথমে আনসার বাহিনীর হেফাজতে রাখা হয়। এরপর উপজেলা পরিষদের নিরাপত্তা কর্মী আনসার আলীর হেফাজতে রাখা হয়। পরবর্তীতে গত ২২ মে থেকে ছাগলটি স্থানীয় ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি কাজলের তত্ত্ববধানে ছিল।
১০ দিন পর নিজের ছাগল ফিরে পেয়ে খুশি সাহারা বেগম বলেন, ছাগল ফেরত পেয়ে আমি খুশি। এই বিষয়ে মধ্যস্থতা করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান রাজু ভাই। আমার মতো গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
আরএআর