আজহারীর মাহফিল ঘিরে ময়মনসিংহে ব্যাপক প্রস্তুতি
বিশ্বনন্দিত ইসলামি বক্তা ও স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী আগামীকাল শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ময়মনসিংহে আসছেন। নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে অনুষ্ঠিত তাফসিরুল কুরআন মাহফিলে আলোচনা করবেন তিনি।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এই উপলক্ষ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে আয়োজক সংগঠন আল ইসলাম ট্রাস্ট।
বিজ্ঞাপন
সংশ্লিষ্টরা জানায়, মাফহিলের জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে সার্কিট হাউজ মাঠ। ২ লাখ বর্গফুটের প্যান্ডেল ছাড়াও পুরো মাঠটিতে অবস্থান নিতে পারবেন সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা। মাহফিল ঘিরে তৈরি করা হয়েছে নিরাপত্তা বেষ্টনী। সেইসঙ্গে সিসি ক্যামেরায় মাহফিলটি নজরদারি করা হবে বলেও জানানো হয়।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ কামরুল হাসান মিলন বলেন, মিজানুর রহমান আজহারী কোনো দল বা গোষ্ঠীর নন। তিনি বিশ্ববরেণ্য একজন ইসলামি স্কলার। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ। তার আগমনের দিন ময়মনসিংহে লাখ লাখ মানুষ থাকবে। যেহেতু লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত থাকবেন, সেহেতু মানুষের কিছু অসুবিধা হতে পারে। সে জন্য তিনি সবার কাছে আগাম দুঃখ প্রকাশ করেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ইসলামের স্বার্থে নগরবাসী এই অসুবিধা মেনে নেবেন বলে আশা করছি। কারণ বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিতির কারণে শহরে যানবাহন চলাচলেও কিছুটা নিয়ন্ত্রণ থাকবে ওইদিন। শম্ভুগঞ্জ ব্রিজের আগেই বড় যানবাহনকে আটকে দেওয়া হবে। এ ছাড়া ময়মনসিংহ নগরের মাসকান্দা, আকুয়া বাইপাস ও রহমতপুর বাইপাসে আটকে দেওয়া হবে বড় যানবাহন। তবে শহরের অবস্থা অনুযায়ী ইজিবাইক (অটো) চলাচল করবে। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ময়মনসিংহে। সেক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য শহরে চলাচলে কোনো বাধা থাকবে না। তবে মূল শহরে যানজটের আশঙ্কায় সবাইকে বাইপাস ব্যবহারের অনুরোধ জানান কামরুল হাসান মিলন।
কামরুল হাসান মিলন অনুরোধ জানান, ওইদিন পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা জনগণের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। তবু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে মাহফিলে অংশ নেওয়া মহিলাদের স্বর্ণালঙ্কারের মতো দামি জিনিস ব্যবহার না করতেও বলেন তিনি। সেইসঙ্গে সবাইকে নিজেদের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে বিশেষ সতর্ক থাকারও আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে মাহফিলকে সফল করার লক্ষ্যে বিএনপি ও জামায়েত ইসলামীসহ ইসলামি দলগুলো একযোগে কাজ করছে। এ ছাড়া ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন এবং জেলা পুলিশের সঙ্গে আয়োজকদের সভা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ বলেন, আমরা মাহফিল সফল করতে সব ধরনের সহযোগিতা করছি। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে কুরআনের এই মাহফিল সফল হবে।
আয়োজক সূত্র জানায়, আজহারীর মাহফিল উপলক্ষে ১০ থেকে ১৫ লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটতে পারে। এজন্য সার্কিট হাউজ মাঠ, জিলা স্কুল মাঠ, গভর্মেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল মাঠ ও উমেদ আলী মাঠ প্রস্তুত করা হচ্ছে। জিলা স্কুল হোস্টেল মাঠ শুধু নারীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই মাঠসহ বিভিন্ন পয়েন্ট ২২টি স্থানে বড় পর্দার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রস্তুতির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ ছাড়া সমাগমকে কেন্দ্র করে তিনটি মেডিকেল ক্যাম্প, চার শতাধিক ওজুখানা ও ওয়াশরুম এবং পর্যাপ্ত খাবার পানির ব্যবস্থা থাকবে। আজহারীর বক্তৃতা প্রচারের জন্য দুই শতাধিক মাইক লাগানো হয়েছে অনুষ্ঠানস্থলসহ আশপাশের এলাকায়।
মো. আমান উল্লাহ আকন্দ/এএমকে