ঢাকা পোস্ট আমাকে শিখিয়েছে মানবিক সাংবাদিকতা
২০২০ সালের শেষের দিকে ফেসবুকজুড়ে ‘নতুন একটি অনলাইন গণমাধ্যম আসছে’-এমন তথ্য ভেসে বেড়াচ্ছিল। তখন আমি অন্য একটি অনলাইন গণমাধ্যমে যুক্ত। সেটা ছেড়ে কাজ শুরু করলাম নতুন গণমাধ্যম ঢাকা পোস্টে। তারপর শুরু হলো নিজেকে নতুন করে প্রমাণের চেষ্টা। তখনো আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেনি ঢাকা পোস্ট।
২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা পোস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। বর্ণিল আয়োজনে কেক কেটে ও আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে রংপুরে শুরু হয় আমার ঢাকা পোস্ট যাত্রার প্রচারণা। সেদিন সবাই বলেছিলেন ‘ঢাকা পোস্ট হোক সবার গণমাধ্যম’। প্রত্যাশার এ বাক্যটিকে ঢাকা পোস্ট খবরের শিরোনাম করেছিল। আমিও প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ঢাকা পোস্ট যেন সবার মত প্রকাশের মাধ্যম হয়, সেভাবেই কাজ করে যাব। সব শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ, মত-আদর্শ ও পথের মানুষের কথা তুলে ধরার আকাঙ্ক্ষা লালন করতে থাকি মনে।
বিজ্ঞাপন
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই খবরের মাঠে সরব থাকায় আমার ১০৯টি সংবাদ ঢাকা পোস্টে জায়গা করে নেয়। তখন নিউজ পোর্টালটি উন্মুক্ত না হলেও খোলা ছিল মাল্টিমিডিয়ার দরজা। এরপর যখন পাঠকের নজরে এলো ঢাকা পোস্ট, তখন বসে থাকার সময় ছিল না। প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রতিযোগী ভেবেই চেষ্টা করে গেছি সবার আগে সবচেয়ে বেশি তথ্য নির্ভর সংবাদ পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার।
ঢাকা পোস্ট আমাকে শিখিয়েছে পেশাগত দায়িত্ব পালনের বাইরেও মানবিক সাংবাদিকতা। আজ যখন পঞ্চম বর্ষে পদার্পণ করতে যাচ্ছে ঢাকা পোস্ট, তখন খুব করে মনে পড়ছে নিউজের পেছনের গল্পগুলো। মনে পড়ছে আমাদের গেটকিপারদের আন্তরিকতা, হাতেকলমে শেখানোর প্রচেষ্টা আর ভালোবাসার কথা।
বিজ্ঞাপন
ঢাকার বাইরে আমার মতো যারা সাংবাদিকতা করেন, তাদের তো এটাই চাওয়া। স্বপ্ন দেখি একদিন হয়তো ‘অর্থনৈতিক নিরাপত্তার’ বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের চিন্তা করতে হবে না। সেই সুদিন চব্বিশের জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করে গণমাধ্যম সংস্কারের মধ্য দিয়ে আসবে এমন আশায় বুক বেঁধে আছি।
মানবিক সাংবাদিকতা এবং ভালোলাগা
বাংলাদেশে অনলাইন সাংবাদিকতার ধারা বদলে দিয়েছে ঢাকা পোস্ট। বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে খুব অল্প সময়ে সব শ্রেণিপেশার মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। পাঠকের প্রত্যাশা পূরণের যে চ্যালেঞ্জ, তা চার বছরের মধ্যে উতরে যাওয়াটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু ঢাকা পোস্ট সেটা অর্জনের সাথে সাথে ডিজিটাল গণমাধ্যমে নতুনত্ব এনেছে। মানবিক সাংবাদিকতায়ও গতি এনেছে। শহর থেকে গ্রামে, সবখানে সবার সংবাদ তুলে ধরার কারণে এখন তৃণমূলে পাঠক সৃষ্টিতে ঢাকা পোস্ট এগিয়ে রয়েছে।
গত চার বছরে রংপুরের নানান সমস্যা-সম্ভাবনা, উন্নয়ন, অনিয়ম-দুর্নীতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম-কর্ম, সংস্কৃতি ও ক্রীড়াঙ্গনের খবরাখবর সাথে একটু একটু করে মিশে গেছে ঢাকা পোস্ট। বাদ পড়েনি রপ্তানিযোগ্য শতরঞ্জি, হাতে বানানো টুপি, সুস্বাদু হাঁড়িভাঙা আম, মিষ্টি কুমড়া, আলু আর বেনারসি পল্লীর গল্প। বিনোদনে তুলে এনেছি রংপুর অঞ্চলের ভাওয়াইয়াকে। তবে সবচেয়ে আলোচনায় ছিল মানবিক সংবাদগুলো। কারণ ‘অসহায় মানুষের ভাগ্য বদলে সহায়ক ভূমিকা’ রেখেছে ঢাকা পোস্টের একেকটি প্রতিবেদন।
অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার টাকা না থাকায় ৯ ঘণ্টা রিকশা চালিয়ে ঠাকুরগাঁও থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে এসেছেন তারেক ইসলাম নামে এক বাবা। ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল সন্তানকে বাঁচাতে রিকশা চালিয়ে রংপুরে আসা সেই বাবাকে নিয়ে ভিডিওসহ প্রথম রিপোর্ট প্রকাশ করে ঢাকা পোস্ট। এরপর অসহায় সেই বাবার সন্তানের চিকিৎসায় এগিয়ে আসেন দেশের বৃহত্তম সুপারশপ স্বপ্ন-এর নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির, জেলা প্রশাসক আসিব আহসানসহ অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। ফলে বিষণ্নতা কাটিয়ে চিকিৎসা শেষে সুস্থ সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরেন তারেক। সঙ্গে সহায়তার অর্থে গ্রামে কিনেছেন জমি, গড়েছেন মাথা গোঁজার ঠাঁই।
এমন অনেক রিপোর্ট রয়েছে যা করতে পেরে নিজেকে অনেক বেশি ভাগ্যবান মনে হয়। কারণ আমার একেকটি রিপোর্টে কারো মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছে, কেউ পেয়েছে রমজানজুড়ে খাবার সামগ্রী, অসহায় পরিবার পেয়েছে চিকিৎসাসেবা, সমাজসেবার ভাতার কার্ডে কারো মুখে হাসি ফিরেছে, কোথাও কোথাও গড়ে উঠেছে মসজিদ-মাদরাসা, সংস্কার হয়েছে রাস্তাঘাটের, খুলেছে উন্নয়নের পথ, কখনো কখনো হাসপাতাল-বিআরটিএ-পাসপোর্ট অফিসসহ সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কিছুটা হলেও ঘুঁচেছে ভোগান্তি।
এই চার বছরে প্রকাশ হওয়া রিপোর্টগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালোলাগা, প্রশান্তি এবং স্মৃতিময় রিপোর্টটি হচ্ছে আমার মাকে নিয়ে তৈরি করা সংবাদটি। যেদিন নিজের মায়ের সামনে একগুচ্ছ প্রশ্ন নিয়ে বসেছিলাম সেদিন একেকটি প্রশ্নের উত্তর দিতে মা কেঁদেছেন। কখনো দু-হাত দিয়ে টেনে নিয়ে আমাকে বুকে আগলে রেখে মা ফেলেছেন দীর্ঘ নিঃশ্বাস, মাথা বুলিয়ে দিয়েছেন অফুরান দোয়া-ভালোবাসা। সেই দিনটি সাংবাদিকতা জীবনে আমার কাছে ছিল অনেক বড় ভালোলাগার মুহূর্ত ও স্মরণীয়। মা দিবসে প্রকাশিত সেই রিপোর্টটির শিরোনাম ছিল - মা দিবসে কাঁদলেন ফাতেমা/‘মা হবো ভাবলে কোনো কষ্টই কষ্ট মনে হতো না’।
যাদের সম্মানিত করেছে ঢাকা পোস্ট
ঢাকা পোস্ট ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসজুড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ‘বিজয়ের স্মৃতিচারণা’ শিরোনামে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবর রহমানকে নিয়ে ‘জানাজা শেষ করেই পাকিস্তানি বাহিনীকে ধাওয়া করি’ শিরোনামে আমার তৈরি ভিডিওসহ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ঢাকা পোস্ট। ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা পোস্টের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবর রহমানকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
২০২২ সালে ভাষার মাসে আমরা পাঠকের কাছে তুলে ধরি ভাষা সৈনিকদের জীবন সংগ্রামের গল্প। ওই বছর ভাষা সৈনিক মোহাম্মদ আফজাল ও ভাষা সৈনিক আশরাফ হোসেন বড়দাকে ঢাকা পোস্টের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। এছাড়াও করোনা মোকাবিলায় সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে অনন্য অবদান রাখায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উই ফর দেম, আমরাই পাশে রংপুর এবং স্বপ্ন ছুঁই ইয়ুথ ফাউন্ডেশনকে দেওয়া হয় সম্মাননা স্মারক।
২০২৩ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন প্রজন্মকে আঞ্চলিক ভাষার চার্চায় উদ্বুদ্ধ করতে বিভাগীয় প্রতিনিধিরা নিজ নিজ অঞ্চলের ভাষায় তৈরি করেন ব্যতিক্রমী প্রতিবেদন। যার পুরোটাই ছিল আঞ্চলিক ভাষায়। সেই লেখায় রংপুর থেকে আমি লিখেছিলাম ‘বাঁচি থাকুক সগার নেজের ভাষা এটাই চায় ভাষাযোদ্ধা মজিবর’। ওই বছর তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ অনুষ্ঠানে একুশে পদকে ভূষিত ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান মাস্টারকে এবং সমাজসেবায় অবদানের জন্য উইমেন্স ড্রিমার ক্রিকেট একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক খেলোয়াড় আরিফা জাহান বীথিকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
সংবাদ ও সাংবাদিকতার বাইরেও রংপুরের এসব সর্বজন শ্রদ্ধেয় গুণীজন ও স্বেচ্ছাসেবীদের সম্মাননা প্রদানের বিষয়টিকে স্বাগত জানায় সচেতন মহলসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। তাদের পরামর্শ এবং উৎসাহ আগামীতে আরও বেশি ভালো কাজে সাহস যোগাবে বলে মনে করি।
বিভাগের ৮ জেলা ভ্রমণ
আমার মতো যারা ঢাকা পোস্টের সঙ্গে যুক্ত তারা এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সাংবাদিকতায় অনেক কিছু অর্জন করেছে। নির্ভরযোগ্য সংবাদ ও সাংবাদিকতার কারণে এলাকায় বেড়েছে মূল্যায়ন এবং অবদান। অভিজ্ঞতার পরিসরে যুক্ত হয়েছে নতুন অনেক কিছুই। তেমনি রংপুর থেকে আমি এবং আমার টিম চেষ্টা করেছি সবসময় ব্যতিক্রম কিছু করার। আমার এই চার বছরে রংপুর বিভাগের ৮ জেলা ভ্রমণ করেছি। দেখেছি দর্শনীয় স্থান, শুনেছি প্রান্তজনের কথা।
জেলায় জেলায় ভ্রমণে সাংবাদিক এবং সাংবাদিক সংগঠনগুলোর সাথে দূরত্ব কমিয়ে বাড়িয়েছি সংখ্যতা। প্রতি দুই মাস পর পর টিমের সহকর্মীদের কাজের মূল্যায়নে হাতে তুলে দিয়েছি ‘অনুপ্রেরণা স্মারক’। কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর ও পঞ্চগড়ে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি আমরা। যখন সেখানে ভ্রমণে গিয়েছি সেখানকার মানুষের চাওয়া-পাওয়ার গল্প কুড়িয়েছি। জেলায় জেলায় ঘুরে ঢাকা পোস্ট জুড়ে তাদের কথা তুলে আনতে চেষ্টা করেছি আমরা।
ঢাকা পোস্টে আমি এবং আমার রিপোর্ট
ঢাকা পোস্টে সবসময়ই চেষ্টা করেছি নিজের সেরাটা দিয়ে কাজ করার। এখনো সেই চেষ্টা করছি। আমি বিশ্বাস করি ‘যতক্ষণ কাজ করতে পারব, ততক্ষণ আমার মূল্যায়ন হবে’। গত চার বছরে ঢাকা পোস্টে আমার জেলার অনেকগুলো রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। যার মধ্যে ৪ হাজার ৮০০ শব্দের সবচেয়ে দীর্ঘ প্রতিবেদন ‘গরিবের ভরসা’ হয়ে উঠেছিলেন রহিম উদ্দিন ও করিম উদ্দিন’। এছাড়া ‘হাজার মরদেহ গোসল করিয়েছেন ১১২ বছর বয়সী রশিদ’; ‘রোগী বাঁচবে না জেনে কৌশলী হন ওঝারা’; ‘রমেক হাসপাতালে মরলেও দিতে হয় বকশিশ’; ‘ডা. মাহবুব রহমানের রিং বাণিজ্য’ নিয়ে ধারাবাহিক রিপোর্টসহ অসংখ্য লেখা প্রকাশ হয়েছে ঢাকা পোস্টে।
চার বছরে (৭ ডিসেম্বর ২০২০ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত) ঢাকা পোস্টে রংপুর থেকে ৩ হাজার ৮৮৭টি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এ তালিকায় প্রথম বছরে ১২০০টি, দ্বিতীয় বছরে ৯২১, তৃতীয় বছরে ১০০৪টি এবং এ বছরে ৭৬২টি রিপোর্ট রয়েছে। যার সঙ্গে ২৫০টির বেশি ভিডিও প্রতিবেদন রয়েছে।
সাংবাদিকতায় আমার অর্জন এবং অভিজ্ঞতা
জন্মলগ্ন থেকে ঢাকা পোস্টের সঙ্গী হতে পারা এবং প্রথম বর্ষপূর্তিতেই সেরা কর্মীর পুরস্কার পাওয়াটা আমার জন্য ছিল অনেক বড় অর্জন। কারণ অনেকগুলো দক্ষ ও তুখোড় সংবাদ লেখকদের ভিড়ে এই পুরস্কারটা আমাকে সামনে আরও ভালো কিছু করার জন্য বেশ অনুপ্রাণিত করে। এরপর আমি ‘বন্ধু বিভাগীয় মিডিয়া ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০২১’; দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ ‘সেরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন-২০২১’ এ প্রথম পুরস্কার অর্জন করেছি।
ক্রীড়া প্রতিবেদনের জন্য ‘উইমেন্স ড্রিমার ক্রিকেট একাডেমি সম্মাননা-২০২৩ পেয়েছি। এছাড়াও নির্বাচন বিষয়ক রিপোর্টিংয়ে সমষ্টি ফেলোশিপ-২০২৩; ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের জেন্ডার সেনসিটিভ রিপোর্টিং ফেলোশিপ-২০২৩, নিউজ নেটওয়ার্কের নির্বাচন বিষয়ক রিপোর্টিংয়ে ফেলোশিপ-২০২৩, মানবিক সাংবাদিকতার জন্য বাংলার চোখ অ্যাওয়ার্ড-২০২৩, জানো প্রকল্প’র পুষ্টি-স্বাস্থ্য ও জেন্ডার সচেতনতা বিষয়ক রিপোর্টিংয়ে ফেলোশিপ-২০২৪ এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্ট’র সহিংসতা প্রতিরোধ ও শান্তি-সম্প্রীতি বিষয়ক রিপোর্টিংয়ে ফেলোশিপ-২০২৪ পেয়েছি।
গত চার বছরে ঢাকা পোস্টের কর্মী হিসেবে ১৫ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিষ ভিত্তিক ২০টি প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়েছে। ২০১৩ ও ২০১৫ সালে দুইবার পিআইবি সেভ দ্য চিলড্রেন শিশুপাতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে উত্তরবাংলা, বাংলামেইল, দাবানল, রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুর ও মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সেরা রিপোর্টারের পুরস্কার পেয়েছি।
যেভাবে সাংবাদিকতায়
সাংবাদিকতায় জড়িয়ে পড়ার নেপথ্যে আমার বন্ধুর বড় বোন সুলতানা জিমির অনুপ্রেরণা আমি সবসময়ই স্বীকার করি। কারণ তার হাত ধরেই সাপ্তাহিক তুফান পত্রিকা অফিসে পদাচরণা শুরু হয়েছিল। তারপর আমার মা-বাবার অনুপ্রেরণা তো আছেই। মূলত ছড়া-কবিতা লেখালেখির হাতেখড়ি থেকে সংবাদমাধ্যমের গুণীজনদের সাথে পরিচয়।
২০০৪ সালে স্থানীয় সাপ্তাহিক তুফান পত্রিকায় লেখালেখিতে হাতেখড়ি। এর পরের বছর থেকে দৈনিক দাবানলের রংপুর সরকারি কলেজ প্রতিনিধি হিসেবে রিপোর্টিংয়ের শুরু। এরপর সেখানেই শহর প্রতিনিধি, নিজস্ব প্রতিবেদক, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, শিশুপাতার বিভাগীয় সম্পাদক, সহ-বার্তা সম্পাদক, প্রধান প্রতিবেদক এবং সবশেষ পরিকল্পনা ও বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। বর্তমানে দৈনিক সকালের বাণীতে পরিকল্পনা সম্পাদক হিসেবে কর্মরত রয়েছি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ছাড়াও নিউজ পোর্টাল অর্থসূচক, বাংলামেইল, ব্রেকিংনিউজ, গোনিউজ, সোনালীনিউজ, বার্তা২৪.কম এবং আলোকিত সময়, আমাদের সময়, আমাদের অর্থনীতি, আমাদের নতুন সময়, আজকালের খবর পত্রিকায় রংপুর থেকে লেখালেখি করার সুযোগ হয়েছে।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি আমি অভিনয়, আবৃত্তি এবং উপস্থাপনা করে থাকি। সংবাদ অনুবাদক ও অভিনয়শিল্পী হিসেবে বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রের সাথে যুক্ত আছি। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গেও রয়েছি। নিজেকে একজন সংবাদকমী ও সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে পরিচয় দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
লেখক : ফরহাদুজ্জামান ফারুক, নিজস্ব প্রতিবেদক (রংপুর), ঢাকা পোস্ট
আরএআর