পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় রাতে ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ও ডিবির যৌথ অভিযানে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের তেঁতুলিয়া মডেল থানায় পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

শনিবার (১ মার্চ) দিবাগত রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন—তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউপির মালিগছ গ্রামের চিহ্নিত চোরাকারবারি শাহারুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন (৪১), তহিদুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, হাসানুর রহমান ও আয়নাল। এদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন রংপুর জেলার আব্দুল আজিজের ছেলে, তহিদুল রিয়াজউদ্দিনের ছেলে, শরিফুল আব্দুল জলিলের ছেলে, হাসানুর বাদশা ফকিরের ছেলে ও আয়নাল আব্দুল জব্বারের ছেলে।

পুলিশ জানায়, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে স্কুল বাসে ডাকাতির পর সারা বাংলাদেশ পুলিশ ডাকাতদের ধরতে অভিযান শুরু করেন। এরই সূত্র ধরে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের একটি দল ডাকাতদের অবস্থান নিশ্চিত করতে রংপুরে আসেন। একপর্যায়ে ডাকাতদের অবস্থান পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুরে দেখা যায়। পরে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ পঞ্চগড় জেলা পুলিশে বিষয়টি জানায়।

খবর পেয়ে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সির নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ প্রশাসন এসএম শফিকুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া থানার ওসি এনায়েত কবীর, সদর থানার ওসি তদন্ত এইচ এস এম সোহরাওয়ার্দিসহ ডিবি পুলিশদের সঙ্গে নিয়ে অভিযান তল্লাশি শুরু করেন।

এর মধ্যে রাতেই খবর পাওয়া যায়, তেঁতুলিয়ার আজিজনগড় এলাকায় বেলায়েত মাস্টারের বাড়িতে ডাকাতি হচ্ছে। পরে তেঁতুলিয়ায় একদিকে গ্রামগুলোতে তল্লাশি অপরদিকে সড়কের বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে নিবীর তল্লাশি চালানো হয়। এদিকে রোববার সকালে তেঁতুলিয়া থেকে ভজনপুর দিয়ে বাসযোগে ডাকাতরা পালানোর সময় ভজনপুর চেকপোস্টে বাস থামিয়ে তল্লাশি করলে পাঁচজন ডাকাতকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ সময় আনোয়ার হোসেন আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য এবং ডাকাতদের পরিবহন করেন তিনি।

এদিকে তেঁতুলিয়া উপজেলায় ডাকাতি হচ্ছে—এমন খবর চাউর হলে গভীর রাতে ভজনপুর-তেঁতুলিয়া মহাসড়কে এসে পুলিশকে সহযোগিতা করেন বিএনপি যুবদল নেতাকর্মীরা। এ সময় তেঁতুলিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. লাবু সড়কে দাঁড়িয়ে মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক করতে থাকেন। পরে তেঁতুলিয়া উপজেলা বিএনপি সদস্য সচিব ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শাহিন নেতাকর্মীদের নিয়ে রাতভর পুলিশি কাজে সহায়তা করেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গভীর রাতে সাহরি খাওয়ার সময় আজিনগর গ্রামের মহাসড়কের পাশে বেলায়েত হোসেনের বাড়িতে আট থেকে ১০ জনের ডাকাত দল আড়াই ভরি স্বর্ণ এবং নগদ ৫০ হাজার নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ছাড়া ভজনপুর ইউনিয়নের বামনপাড়া গ্রামে ৬-৭ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ডাকাতির চেষ্টা করে।

পঞ্চগড় পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। প্রেস ব্রিফিং বা প্রেস রিলিজের মাধ্যমে আপনাদের জানানো হবে।

এসকে দোয়েল/এএমকে