ফরিদপুরে পদত্যাগের ৭ ঘণ্টা পর ছাত্রদলের দুই নেতাকে বহিষ্কার
ফরিদপুরের বোয়ালমারী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণার পরদিন কমিটিতে থাকা ১৮ সদস্যের মধ্যে ১১ জনই পদত্যাগ করেছেন। সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগ করার সাত ঘণ্টা পর পদত্যাগ করা ১১ জনের মধ্যে দুই ছাত্রদল নেতাকে কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সহসভাপতি পদ হারানো ওই দুই নেতা হলেন- বোয়ালমারী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সহসভাপতি মো. শামীম ও মোহাম্মদ ইউসুফ শেখ।
বিজ্ঞাপন
রোববার (২ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত ‘বহিষ্কার আদেশ প্রদান’ শিরোনামে এক প্রেস বিজ্ঞপিতে বলে হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ফরিদপুর জেলা শাখার অধীনস্থ বোয়ালমারী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. শামীম এবং সহ-সভাপতি ইউসুফ শেখকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন আজ এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাদের সাথে কোনোরূপ সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।’
প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৈয়দ আদনান হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বোয়ালমারী সরকারি কলেজ শিক্ষার্থী পাপ্পু বিশ্বাস ওরফে নাঈমকে সভাপতি ও সম্রাট মোল্লাকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি অনসুমোদন দেয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে নতুন কমিটির পূর্ণাঙ্গ করে আগামী ২১ দিনের মধ্যে জেলা ছাত্রদলের দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
ঘোষিত ওই কমিটির বিরোধিতা করে রোববার (২ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বোয়ালমারী কলেজ সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সদ্য ঘোষিত কমিটিতে ‘ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন ও অছাত্রদের স্থান দেওয়ার অভিযোগ’ এনে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির ১১ জন সদস্য পদত্যাগ করেন। এদের মধ্যে কেন্দ্র থেকে ‘প্রাথমিক সদস্য পদসহ সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার’ হওয়া বোয়ালমারী সরকারী কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. শামীম ও মোহাম্মদ ইউসুফ শেখ রয়েছেন।
পদত্যাগকারীরা সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিগত সরকারের আমলে জেল, জুলুম, নির্যাতনের শিকার হওয়া কর্মীদের অবমূল্যায়ন করে বাণিজ্যের মাধ্যমে নতুন পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিগত দিনে যারা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে সুবিধা ভোগ করেছেন, ৫ আগস্টের পরে তারা বিএনপির চেতনায় ফিরে এসে বিভিন্ন ভাবে বড় বড় পদ বাগিয়ে নিচ্ছেন। এ সময় তারা এই পকেট কমিটি বিলুপ্ত করে আবার নতুন কমিটি ঘোষণা করার দাবি জানান।
পদ হারানো বোয়ালমারী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. শামীম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ১০ বছর ধরে ছাত্রদলের রাজনীতি করছি, মাইর খাইছি, পাটখেতে পলাইছি, রাজেন্দ্র কলেজে চান্স পাইয়াও ভর্তি হই নাই এই কলেজের পদ পাব বলে।
তিনি বলেন, যে দলের জন্য এতো কিছু করলাম সেই দল যখন আমাকে মূল্যায়ন করলো না, এখন এই রাজনীতিই আর করলাম না।
পদ হারানো অপর সহ-সভাপতি ইউসুফ শেখ বলেন, দল আমাদের অভিমানের ভাষা বুঝতে পরেনি। আমরা তো দল ছাড়ার জন্য পদত্যাগ করিনি, অভিমান করে করেছি। কিন্তু দল হয়তো কোনো বড় নেতার ইদ্ধনে আমাদের দলত্যাগী ১১ জনের মধ্য থেকে দুইজনকে এই পরিণতির দিকে ঠেলে দিলো।
জহির হোসেন/আরএআর