লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে জমি দাবি করে খালের একাংশ দখল করার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা খাল দখলে বাধা দিয়েও তা বন্ধ করতে পারেননি। মাটি ভর্তি ব্যাগ ফেলে ফারজানা আক্তার নামে এক নারী খাল দখল করেন।

গতকাল উপজেলার তোরাবগঞ্জ বাজার এলাকার তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়কের পাশে ঘটনাটি ঘটে।

পরে খবর পেয়ে দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নির্দেশে একজন সহকারী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা এসে খালের দখল বন্ধ করেন। তবে খাল দখলমুক্ত করতে দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ভূমিকা না থাকায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

অভিযুক্ত ফারজানা উপজেলার চরকালকিনি ইউনিয়নের মতিরহাট এলাকার মৃত বাবুল মেম্বারের মেয়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম, মো. সুজন ও সোহাগ হোসেন জানান, কয়েক বছর আগে ফারজানা তাদের পারিবারিক সব জমি বিক্রি করে দেয়। ২০২৩ সালে ওই জমিতে ক্রেতারা বহুতল ভবনও নির্মাণ করে। কিন্তু একই বছর ফারজানা জোরপূর্বক খালের ভেতর পিলার নির্মাণ করে একটি অংশ দখল করে দোকান নির্মাণ কাজ শুরু করেন তিনি। তখন স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে খাল দখলের সত্যতা পায় এবং নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে পিলারটিও ভেঙে দেওয়া হয়। তখন ফারজানার ছোট ভাই খাল দখল করবে না বলে মুচলেকাও দেন প্রশাসনের কাছে।

নুরুল ইসলাম জানান, নিজেদের জমি দাবি করে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ফারজানা ফের খালের ভেতর পিলার নির্মাণ কাজ শুরু করে। এবারও প্রশাসনের বাধায় পিলারটি ভেঙে ফেলতে হয়। এবার তিনি পিলার না দিয়ে মাটি ভর্তি ব্যাগ ফেলে খালটির একাংশ দখল করে নেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন জানান, এ খালের পানি দিয়ে চরকাদিরা, তোরাবগঞ্জ ও চরলরেন্স ইউনিয়নের কয়েক’শ একর জমিতে চাষাবাদ হয়। প্রতিনিয়ত দখল কার্যক্রম চলতে থাকলে খালের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।
 
এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও ফারজানা আক্তারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কমলনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঝন্টু বিকাশ চাকমা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ইউনিয়নের একজন ভূমি কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। তিনি খাল দখল বন্ধ রাখতে বলেছেন। খালপাড়ের জমির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লক্ষ্মীপুর জেলার নদী ও খাল রক্ষা কমিটির সদস্য আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, সম্প্রতি বন্যার সময় জেলার খাল-নদী অবৈধ দখল ও দখলদারদের কাছ থেকে মুক্ত করার জন্য সুপ্রিম কোর্ট একটি আদেশ দেন। প্রশাসন থেকে যদি দখলদারদের বিষয়ে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করবো। এজন্য সাধারণ মানুষকে খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।

এআইএস