মুন্সীগঞ্জে দুই পক্ষের গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আলু পরিবহন কাজের কর্তৃত্ব ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (৮ মার্চ) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলম আজাদ।
বিজ্ঞাপন
এর আগে, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের করিমখাঁ গ্রামে ভাটি চকে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় ১৫ থেকে ২০ রাউন্ড গুলি এবং আতঙ্ক তৈরি করতে প্রায় পাঁচ-ছয়টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত না হলেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। ঘটনার পর আলু পরিবহন কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা ।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইমামপুর ইউনিয়নের করিমখাঁ গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে রমজান গ্রুপের সঙ্গে হোগলাকান্দির লালু-সৈকত গ্রুপের বিরোধ ছিল। রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘদিন রমজান এলাকার বাইরে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি এলাকায় ফিরে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছিলেন। চলমান আলু উত্তোলন মৌসুমে ট্রাক্টরে আলু পরিবহন কাজের কর্তৃত্ব নিয়ে সম্প্রতি দ্বন্দ্বে জড়ায় উভয়পক্ষ। অন্যান্য বছরের মতো এবারও লালু-সৈকত গ্রুপের লোকজন একচ্ছত্রভাবে ট্রাক্টরে আলু পরিবহনের কাজ করতে চাইলে সেখানে বাধা দেন রমজান। শুক্রবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে হোগলাকান্দি গ্রাম-সংলগ্ন ভাটি চকে কৃষকের জমি থেকে লালু-সৈকত গ্রুপের লোকজন তাদের ট্রাক্টরে আলুর বস্তা লোড করার সময় সেখানে বাধা দেন রমজানসহ তার গ্রুপের লোকজন। এ সময় আতঙ্ক তৈরি করতে প্রথমে প্রায় পাঁচ-ছয়টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে রাত ১২টা পর্যন্ত গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় ২০ রাউন্ডের মতো গুলিবর্ষণ করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা কৃষক আব্দুল আলী বলেন, ওই চকে আলু পরিবহনের কাজে অন্য কোনো লোক আসতে পারে না। শুধু একটি পক্ষই দীর্ঘদিন ধরে এই কাজটি করছে। স্বাভাবিকের চাইতে অন্তত বস্তাপ্রতি ১৫ টাকা বেশি দিয়ে আমাদের আলু পরিবহনের কাজটি করতে হয়। এ কাজে অনেক লাভ হয় বিধায় আলু পরিবহনের কর্তৃত্ব নিয়ে গতকাল রাতে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। এখন আপাতত আলু পরিবহনের কাজ বন্ধ। দ্রুত অবস্থার উন্নতি না ঘটলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
কয়েকজন কৃষক জানান, আলু পরিবহন করতে স্বাভাবিক ভাড়া ২০ টাকা বস্তা হলেও রমজান গ্রুপ প্রতি বস্তা ৩০ টাকার বিনিময়ে পারাপার করছিল। তবে লালু গ্রুপ প্রতি বস্তা আলুর ভাস্তা ১০০ টাকা করে চায়।
স্থানীয় কৃষক মোকাররম হোসেন বলেন, উভয় পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে আলু পরিবহনের কাজ আপাতত বন্ধ। ভয়ে কেউ ট্রাক্টর নিয়ে আলু পরিবহনের কাজ করতে আসছেন না । আমাদের উত্তোলিত আলু জমিতে পড়ে আছে।
এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানতে রমজান এবং লালুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, শনিবার সকালে আমি খবরটি পেয়েছি। জড়িতদের ধরতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কৃষক যাতে নির্বিঘ্নে তাদের আলু পরিবহন করতে পারেন আমরা সেই ব্যবস্থা করছি।
ব. ম শামীম/এএমকে