ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের বাসিন্দাসহ কালীপূজায় লাখো মানুষের ঢল
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার শেখরনগর গ্রামের ইছামতি নদীর পাড়ে অনুষ্ঠিত কালীপূজায় ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের বাসিন্দাসহ লাখো মানুষের ঢল নেমেছে।
প্রতিবারের ন্যায় এবারও শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহাসিক শেখরনগর কালী মন্দিরের কালীপূজা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী কালীপূজা সব ধর্মাবলম্বীদের অংশগ্রহণে উৎসবে পরিণত হয়েছে। শেখরনগর ঋষি সমিতির উদ্যোগে বাংলা ৯০১ সন থেকে কালীপূজা হয়ে আসছে। বর্তমানে এই কালীপূজার বয়স ৫৩০ বছরের বেশি।
বিজ্ঞাপন
ইছামতির পাড়ে জেলার সিরাজদিখান উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নের শেখরনগর কালী মন্দির প্রাঙ্গণে মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল থেকে শুরু হয়েছে এ পূজা। উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে মন্দির এলাকায়। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা হলেও সেখানে সমাগম ঘটেছে সব ধর্মের লোকের।
বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কালীর ভক্তরা ছুটে এসেছেন পূজায়। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল থেকে এ পূজায় সাধু-সন্ন্যাসীদের সমাগম ঘটেছে। এতে সাধু-সন্ন্যাসীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে শেখরনগর কালী মন্দির।
বিজ্ঞাপন
এ পূজার প্রধান আকর্ষণ পাঁঠাবলি। আর পাঁঠাবলি দেখতে সেখানে মিলন ঘটবে সব ধর্মাবলম্বীর। বুধবার ভোর থেকে পাঁঠাবলি দেওয়া শুরু হবে। এবার ২ হাজারের বেশি পাঁঠাবলি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পূজা উপলক্ষ্যে ইছামতির পাড়ে বসেছে বিশাল মেলা। শতাধিক স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মেলায়। রাত যত বাড়তে থাকে পূজা ও মেলা প্রাঙ্গণে লোকসমাগম তত বাড়তে থাকে। লাখো মানুষ সমাগম ঘটেছে পূজায়।
শিশুদের জন্য নাগর দোলা, হর্স রেস ও রেলওয়ে ভ্রমণ ব্যবস্থা রয়েছে মেলায়। লোহার তৈরি দা, কুড়াল, বটি, কাচি, হাসুয়া, কোদালসহ গৃহস্থালি কাজের রকমারি জিনিসপত্র পাওয়া যায়। বাঁশ ও কাঠের তৈরি নানা আসবাবপত্র, কুটির শিল্পের নানা পণ্য এবং মিষ্টান্নের সঙ্গে কসমেটিকস সামগ্রীতে সেজেছে মেলার স্টলগুলো।
শেখরনগর ইউপি চেয়ারম্যান দেবব্রত সরকার টুটুল বলেন, ৫৩০ বছরের পুরোনো এ মেলা এ অঞ্চলের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। একদিনের পূজা হলেও মেলা চলে সপ্তাহখানেক। পূজাকে কেন্দ্র করে সব ধর্মের মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়।
শেখরনগর কালী মন্দিরের পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রতন চন্দ্র দাস বলেন, কালীপূজা ও মেলায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটে থাকে। বুধবার ভোর ৫টা থেকে কালি মন্দিরে পাঁঠাবলি শুরু হবে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন থেকেও আমাদের সঙ্গে একাধিক মিটিং হয়েছে।
সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহেদ আল মামুন বলেন, কালীপূজার মেলাকে ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য তিন শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ প্রশাসন পাশে আছে বলেও জানান তিনি।
ব.ম শামীম/এসএসএইচ