কীর্তনখোলার বেলতলা খেয়াঘাটের ইজারা বাতিলের দাবি
বরিশাল সদর উপজেলার কীর্তনখোলা (বেলতলা) খেয়াঘাটের ইজারা বাতিলসহ ১৮ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চরমোনাই ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ।
রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাকক্ষে বরিশাল সদর উপজেলার ৫নং চরমোনাই ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার শীষ মো. মামুন।
বিজ্ঞাপন
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়—জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে বরিশাল সদর উপজেলার কীর্তনখোলা (বেলতলা) খেয়াঘাট থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার হয়। খেয়াঘাট থেকে যাতায়াতরত মানুষের কাছ থেকে প্রতিনিয়তই সরকার নির্ধারিত ভাড়ার থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়। বাড়তি এই ভাড়া নিয়ে প্রতিবাদ কিংবা অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না। ফলে বরিশালের সঙ্গে চরমোনাই ইউনিয়নের সংযোগে থাকা কীর্তনখোলা (বেলতলা) খেয়াঘাট জনভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেলা পরিষদের কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পেশি শক্তির প্রভাব দেখিয়ে এসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করছে ইজারাদাররা।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
এ সময় ১৮ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো—
খেয়াঘাটের ইজারা বাতিল করে ঘাট উন্মুক্ত করে দিতে হবে, ইজারা বাতিল হওয়ার আগ পর্যন্ত জনপ্রতি ভাড়া ৩ টাকা নির্ধারণ করতে হবে, মোটর সাইকেলের ভাড়া ১০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে, তিন চাকার বাহনের ভাড়া ১৫ টাকা নির্ধারণ করতে হবে, চালকসহ বাইসাইকেলের ভাড়া সাত টাকা নির্ধারণ করতে হবে, গরু-মহিষের ভাড়া ১৫ টাকা নির্ধারণ করতে হবে, মালামালের ভাড়া কমিয়ে আনতে হবে, ছাত্র-ছাত্রী, ইমাম ও প্রতিবন্ধীদের ভাড়া মওকুফ করতে হবে, অন্যান্য যানবাহনের ভাড়া কমিয়ে আনতে হবে, জেলা পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত খেয়া পারাপারের ভাড়ার তালিকা টানাতে হবে, খেয়া পরাপাড়ের জন্য ন্যূনতম ছয়টি ট্রলারের ব্যবস্থা করতে হবে, জেলা পরিষদ কর্তৃক স্বতন্ত্র খেয়াঘাট প্রস্তুত করতে হবে, ঘাট এরিয়ায় পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করতে হবে, দুই পাড়েই যাত্রী ছাউনি প্রস্তুত করতে হবে, নারী বান্ধব জেটি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে, সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ৫ মিনিট পর পর ট্রলার ছাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে, নির্ধারিত ভাড়ার থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে, যাত্রীদের সঙ্গে কেউ দুর্ব্যবহার করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে, মানুষ ও পশু এক ট্রলারে বহন করা যাবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ মো. মাসুম বিল্লাহ, আবু হানিফ, খন্দকার রাকিব ও সাহবুদ্দিন হাওলাদারসহ আরও অনেকে।
চরমোনাইবাসীর দাবি—এই দুর্মূল্যের বাজারে জনগণের জীবন ও জীবিকার কথা চিন্তা করে কীর্তনখোলা (বেলতলা) খেয়াঘাটের ইজারা বাতিল করার দাবি জানান। নৌপথে দুর্ঘটনা এড়াতে দিনের বেলা বাল্কহেড চলাচল বন্ধ করতে হবে। যত্রতত্র চাঁদাবাজি বন্ধ করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।
এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা পরিষদের প্রশাসক ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. সোহরাব হোসেন বলেন, জেলা পরিষদের ঘাটটি আগে থেকেই ইজারা হয়ে আসছে। বেলতলা খেয়াঘাটের এবারও ইজারা যথারীতি চলবে। তবে ইজারাদার কর্তৃক অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এএমকে