নেত্রকোণায় নকল ও ভেজাল পণ্য উৎপাদনকারী একটি কারখানায় অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় কারখানাটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে সদর উপজেলার বালুয়াকান্দা এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় কারখানার মালিক ও কোনো কর্মচারী উপস্থিত না থাকায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কারখানার মালিক মো. কামরুজ্জামান কেন্দুয়া উপজেলার পেরিরচর গ্রামের মো. আজিজুর রহমানের ছেলে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতে অভিযান পরিচালনা করেন নেত্রকোণা সদরের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসিব উল-আহসান। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন র‍্যাব-১৪ এর কোম্পানি কমান্ডার ও তার দল, নেত্রকোণা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, ও জেলা পুলিশের একটি দল।

কারখানাটিতে তৃপ্তি লাচ্ছি, তৃপ্তি আম রস, তৃপ্তির লিচি ডিংকস, পাটেশ্বরী ব্লেক টি, পাটেশ্বরী টুথ পাউডার, রেখা ড্রিংকো, প্রদীপ মার্কা সরিষার তেল, পাটেশ্বরী ডিটারজেন্ট পাউডার, প্রিমিয়াম নিয়াজিপুরসহ বিভিন্ন ভেজাল পণ্য তৈরি করা হতো।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দেড় থেকে দুই মাস আগে কেন্দুয়া উপজেলার কামরুজ্জামান নামে একজন এই মিলের গোডাউনটি ভাড়া নেন। কিন্তু ভেতরে কেউ প্রবেশ করতে পারতো না। দিনের বেলায় এখানে কোনো কার্যক্রম চলতো না। রাতের বেলায় এখানে মেশিন চালানোর শব্দ পাওয়া যেত এবং টুকটাক কাজের শব্দ পাওয়া যেত।

৭নং কাইলাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, এখানে একটি অবৈধ মালামাল তৈরির কারখানা স্থাপন হয়েছে। বিভিন্ন নামি-দামি ব্র্যান্ডের আড়ালে অথবা সামঞ্জস্যপূর্ণ নাম দিয়ে তারা এখানে বিভিন্ন রকম খাদ্য পণ্য ও কসমেটিক্স আইটেম তৈরি করতেন। এর আগেও আমরা এখানে এসেছি কিন্তু তখন এ অবস্থা দেখিনি। কিছুদিন আগেও সব ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু ইদানিং এখানে রাতের অন্ধকারে এ ধরনের মালামাল তৈরি করে আসছিল। আজকে এখানে একটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা হয়েছে। তারা এই কারখানাকে সিলগালা করে দিয়েছেন এবং এখানকার মালামালগুলো আমার জিম্মায় রেখেছেন।

নেত্রকোণা সদরের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসিব উল-আহসান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি একটি নকল পণ্য তৈরির কারখানা স্থাপিত হয়েছে। তার ভিত্তিতে আমরা এখানে অভিযান পরিচালনা করি। এখানে যখন ঢুকি তখন কোনো কর্মচারী কর্মরত ছিলেন না। আমরা এখানে ঢোকার পর বিপুল পরিমাণ বোতলজার জুস পেয়েছি যেগুলো আমাদের কাছে অনুমোদনহীন মনে হয়েছে। এছাড়া বাজারে যেসব চলমান প্রোডাক্ট আছে তার কাছাকাছি নাম দিয়ে তারা এই প্রোডাক্টগুলো তৈরি করে মার্কেটে ছাড়ছিলেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। 

তিনি আরো জানান, অভিযানে আমরা নকল যে জুসগুলো পেয়েছি বা অন্যান্য পণ্য পেয়েছি সেগুলো আমরা জব্দ করেছি। এবং এই গোডাউনটি যিনি ভাড়া নিয়ে পরিচালনা করতেন তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাকে ঘটনাস্থলে আসতে বলেছি কিন্তু তিনি আসেননি। পরে আমরা এগুলো জব্দ করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের জিম্মায় রেখেছি এবং এটিকে সিলগালা করে দিয়েছি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সিলগালা থাকবে।

চয়ন দেবনাথ মুন্না/এমএএস