বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, যুদ্ধের সময় দেশ ছেড়ে তাদের নেতা (শেখ মুজিবুর রহমান) পালিয়ে গেলেন। নেতা এলেন বিদেশ থেকে। এদেশের জনগণ ভালোবাসার কমতি দেখায় নাই। এয়ারপোর্টে গিয়েছে লাখ লাখ জনতা। আপনি যুদ্ধে ছিলেন না, তারপরও আপনাকে স্বাগত জানাতে গেছে। ভালোবাসা দিতে ভুল করে নাই। কিন্তু তিনি কি করলেন, যারা আপনাকে নেতা বানালেন তাদের ওপরই বাকশালি স্টিমরোলার চালালেন।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা বিএনপি'র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, নেতার সাথে যতক্ষণ জনগণ থাকে ততক্ষণ নেতার গায়ে কেউ ছোঁয়ার সাহস পায় না। নেতার সাথে যখন জনগণ থাকে না তখন মশাও নেতাকে ঠোকর মারে। ভাইয়েরা আমার, সেই ৭২ থেকে ৭৫ সালের ইতিহাস নতুন করে বলবার নয়। আপনারা এই ইতিহাস বহুবার পড়েছেন। মানুষের বমি মানুষ খেয়েছে। ডাস্টবিনে মানুষ এবং কুকুর পাশাপাশি খাবার খেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নেতার ছেলের বিয়ে হয় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে। সোনার চামচ দিয়ে ছেলের বউয়ের মুখে ফিন্নি তুলে দেয়। আর ঢাকার রাস্তায় লাশের ওপর লাশ স্তুপ হয়ে পড়ে আছে, তাদের খবর রাখা হয় না। নোঙ্গরখানা থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষের লাশ নিয়ে যাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। আর আওয়ামী লীগের নেতারা জনশূন্য নেতারা সন্ধ্যা হলেই হোটেল ইন্টারকন্টিনেটালের নিচ তলায় মদের আসরে মাতিয়ে দিত। সিপাহী জনতার বিপ্লবের পর আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান সামনে এসে বললেন, না না এরকম চলতে পারে না। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম আমাদের দেশের জনগণের খাবার তুলে দেওয়ার জন্য বমি তুলে দিতে নয়। 

তাড়াইল সাচাইল কাসেমুল উলুম দারুল হুদা মাদরাসা মাঠে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম।

স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও তার সরকারের পতনের পর মুক্ত পরিবেশে আয়োজিত সম্মেলন ঘিরে বিএনপির তৃণমূলে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাসহ সম্ভাব্য পদপ্রত্যাশী ও উপজেলা বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে উপস্থিত হোন।

সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরিফুল আলম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন ও আবু ওয়াহাব আকন্দ, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, রুহুল হুসাইন, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়া উপস্থিত ছিলেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন কমিটি ঘোষণার আগে আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়।

মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয়/এমএএস