আন্দোলনে শহীদের ভাইকে কুপিয়ে জখম, প্রবাস থেকেও হলেন আসামি
নোয়াখালী জেলায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভীর ছোট ভাই স্কুলছাত্র শাহরিয়ার হাসান রিমনকে (১৭) এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহতের ঘটনায় হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে ভুক্তভোগীর মা ফরিদা ইয়াছমিন ২৪ জনকে এজহারভূক্ত ও ১২/১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। পুলিশের অভিযানে এ পর্যন্ত ৭ কিশোরকে গ্রেপ্তার হয়। তারা সবাই গাজীপুর কিশোর সংশোধনাগারে আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগীর মা ফরিদা ইয়াছমিন ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে যে মামলাটি দায়ের করেছেন তার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে
২৪ নম্বর এজহারভুক্ত আসামি শাহরিয়ার শাওন। যার আসল নাম শাহরিয়ার জামান শাওন। তিনি তিন মাস আগে কাতার পাড়ি জমান। তার পাসপোর্ট ও বিমানযাত্রার তথ্য প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে, যা থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে তিনি ঘটনার সময় দেশে ছিলেন না।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এজাহারে অনেকের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে পূর্বের ব্যক্তিগত বিরোধ, সামাজিক প্রতিহিংসা কিংবা ক্ষোভের কারণে। ভুক্তভোগীর সঙ্গে বিবাদে জড়ানো কিছু সহপাঠীর নামও এতে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মামলার এজহারভুক্ত এক আসামির বাবা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছেলে ঘটনাস্থলে ছিল না এবং কোনোভাবেই জড়িত নয়। কিন্তু আমার ছেলেকে আসামি করা হয়েছে। এখানে দুইটা কিশোর গ্যাং গ্রুপের মারামারি হয়েছে। যা কয়েকদিন ধরে চলে আসছে। রিমন নিজেই একটা কিশোর গ্যাং গ্রুপ চালায়। সেই গ্রুপের নাম সাইকো। আমরা সবাই একটা ন্যায় বিচার কামনা করছি।
কাতার প্রবাসী শাওনের বাবা দুলাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছেলে গত ২৮ জানুয়ারি কাতার গেছে। কিন্তু আমার ছেলেকেও আসামি করা হয়েছে। আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। একটা ছেলে নোয়াখালী কিংবা দেশেই নাই কিন্তু তাকে আসামি করা হয়েছে। আমি আল্লাহর কাছে বিচার চাই। কারো কাছে কিছু চাই না।
এবিষয়ে মামলার বাদী ভুক্তভোগী মা ফরিদা ইয়াছমিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি এজহারে স্বাক্ষর করিনি। পুলিশ আমাকে বলেছে নামগুলো বলার জন্য আমি সাতজনের নাম ছবি দিয়েছি কিন্তু ২৪ জন হওয়ার বিষয়ে আমার জানা নাই। আমি ছেলেকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে আছি। নোয়াখালী আসলে বিস্তারিত কথা হবে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাদী স্বাক্ষর না দিলে মামলা হতো না। উনি দায় এড়ানোর জন্য স্বাক্ষর না দেওয়ার কথা বলছেন। আমরা মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করেছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম ঢাকা পোস্টকে বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি বিদেশে অবস্থান করেন এবং তাকে মামলার আসামি করা হয়, তাহলে আমরা তার বিষয়ে রিপোর্ট প্রদানের সুযোগ রাখি। তবে এজন্য আমাদের কাছে প্রাসঙ্গিক ও প্রমাণযোগ্য ডকুমেন্ট থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে তদন্ত শেষে, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে চূড়ান্ত রিপোর্টে তার নাম অন্তর্ভুক্ত নাও থাকতে পারে।
হাসিব আল আমিন/আরকে