বিয়ের ১ বছরের মাথায় জীবন প্রদীপ নিভে যেতে বসেছে কুড়িগ্রামের ২০ বছর বয়সী তরুণী নাজমিন নাহারের। এমন বয়সে নষ্ট হয়ে গেছে হার্টের দু-টি ভালভ। এদিকে স্ত্রীর অসুস্থতা দেখে ছেড়ে গেছে স্বামীও। বাবা হারা তরুণীর নেই উন্নত চিকিৎসার সামর্থ। এ অবস্থায় দেশবাসীর সহযোগিতায় বাঁচতে চান তিনি। 

জানা গেছে, স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর বিধবা মায়ের ঘরে আশ্রয় নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে দিন কাটছে নাহারের। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের মৌলভীপাড়া এলাকার মৃত জাবেদ আলী-মর্জিনা বেগম দম্পতির ৮ সন্তানের মধ্যে ৫ম তিনি। এক বছর আগে পারিবারিকভাবে রংপুরের বাসিন্দা খালেক নামের এক গার্মেন্টস শ্রমিকের সাথে বিয়ে হয় তার। অভাব অনটনের সংসারের ঘানি টানতে নিজেও ঢাকায় গিয়ে স্বামীর সঙ্গে চাকরি করেন গার্মেন্টসে। কাজ করা অবস্থায় গত ৫ মাস আগে হঠাৎ অসুস্থতা বোধ করলে বাড়িতে ফিরে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে পরীক্ষা নিরীক্ষায় জানা যায় তার হার্টের দু-টি ভালভ নষ্ট হয়ে গেছে। 

নাহারের পরিবার জানায়, চিকিৎসক জানিয়েছেন উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন নাহার। আর এতে খরচ হবে কয়েক লাখ টাকা। এদিকে টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে না পারায় অনেকটাই মানবেতর দিন কাটছে পরিবারটির।

নাহার বলেন, আমার অসুখ দেখে স্বামী ছেড়ে গেছে। আমার বাবাও নাই যে চিকিৎসা করাবে। মায়ের সংসারে অভাব থাকার কারণে আমার দুই ভাই এতিম খানায় থাকে। উন্নত চিকিৎসা তো দূরের কথা, ঠিকমতো ওষুধ কিনে খেতে পারছি না।  

স্থানীয় হাবিবুর রহমান মিন্টু বলেন, মেয়েটার ১ বছর আগে বিয়ে হয়। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ধরা পড়ে তার হার্টের দুটি ভালভ নষ্ট হয়ে গেছে। স্ত্রী অসুস্থ দেখে তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। তার এখন চিকিৎসা করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। ঠিকমতো তিনবেলা খেতে পারে না পরিবারটি। এতো টাকা কই পাবে তারা। কেউ যদি মেয়েটির চিকিৎসায় পাশে দাঁড়াতো তাহলে মেয়েটা সুস্থ হতো।

নাহারের মা মর্জিনা বেগম বলেন, অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসা নিয়ে মহাদুঃশ্চিতায় আছি। স্বামীও নাই যে চিকিৎসা করাবে। জামাই ছিল মেয়ের অসুখ দেখে ছেড়ে গেছে। কেউ যদি আমার মেয়েটার চিকিৎসার দায়িত্ব নিতো সারাজীবন তার জন্য দোয়া করতাম।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু বক্কর বলেন, অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা নাহারের বিধবা মা। তার সুস্থতায় দরকার উন্নত চিকিৎসা। কিন্তু অর্থের অভাবে তা হচ্ছে না। এজন্য সরকারের পাশাপাশি দেশবাসী সহযোগিতা করলে হয়তো সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে।

মমিনুল ইসলাম বাবু/এমএএস