মাদারীপুরে হাসান উজ্জামান প্রিন্স (৪২) নামে এক কাপড় ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (৫ মে) দুপুরে জেলার শিবচর পৌর শহরের ১ নং ওয়ার্ডের গুয়াতলা এলাকার নাসরিন আক্তার মায়ার মালিকানাধীন ভবনের চতুর্থ তলার ভাড়া বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। 

নিহত হাসান উজ্জামান প্রিন্স শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল গ্রামের মৃত হাজী আবুল কাশেম চাঁন মিয়ার ছেলে। 

পুলিশ ও নিহতের স্বজন সূত্রে জানা যায়, এক সময় প্রবাসে ছিলেন প্রিন্স। প্রবাস থেকে এসে শিবচর বাজারে নিজেদের থান কাপড়ের দোকান পরিচালনা করতেন তিনি। দীর্ঘদিন আগে প্রিন্সের প্রথম স্ত্রীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর একাধিক বিয়ে করেছেন তিনি। কিন্তু কোনো স্ত্রীর সাথেই তিনি সংসার সাজাতে পারেননি। বিভিন্ন কারণে তার সংসার ভেঙে গেছে। 

প্রতিদিনের মতো সোমবার দুপুর ১২টার দিকে প্রিন্সের বাসায় আসেন কাজের মেয়ে রিমু আক্তার। এ সময় ভেতর থেকে দরজা লাগানো দেখে বাড়িওয়ালিসহ আশপাশের লোকজনকে তিনি ডেকে আনেন। পরে ঘরের ভেতরে গিয়ে দেখেন ফ্যানের সঙ্গে প্রিন্সের মরদেহ ঝুলে আছে। এরপর শিবচর থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। 

এদিকে প্রিন্সের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মেয়ে রোজার বয়স ৪ বছর ও ছেলে রাইয়ানের বয়স ৮ বছর। ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার জন্য গত বছর ডিসেম্বর মাসে শিবচর পৌর শহরের হাতির বাগান মাঠ সংলগ্ন নাসরিন আক্তার মায়ার মালিকানাধীন ভবনের চতুর্থ তলায় বাসা ভাড়া নেন প্রিন্স। তবে এ ঘটনার ৪-৫ দিন আগে ছেলেমেয়ে দুজনেই তার দাদা বাড়ি চরশ্যামাইল গ্রামে যায়।

এ বিষয়ে নিহতের মামা হাজী সাইদুজ্জামান নাসিম বলেন, আমাদের জানা মতে আমার ভাগিনার তেমন কোনো শত্রু ছিল না। এটি হত্যা না আত্মহত্যা এটাও আমরা বলতে পারছি না। তবে আমরা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সত্য ঘটনা উদ্ঘাটন হোক।

শিবচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ বলেন, গলায় ফাঁসি দেওয়া অবস্থায় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ফাঁসির বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। কেননা ফাঁসির দড়ির ভিতরে গলায় আরেকটি টি-শার্ট পেঁচানো ছিল। বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। আমরা অধিকতর তদন্ত করছি এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা তদন্ত রিপোর্ট আসলেই পরিষ্কার হবে।

আকাশ আহম্মেদ সোহেল/আরএআর