জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। তাই প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এবং নতুন করে মামলা দিয়ে হয়রানি করার জন্য কথিত অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন কৃষক ফরিদ খান (৫০)। এ কারণেই এক সপ্তাহ ধরে তিনি গিয়েছিলেন স্বেচ্ছা নির্বাসনে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদউজ্জামান। এর আগে, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহরের পূর্ব খাবাসপুর মোড় এলাকায় এক আইনজীবীর চেম্বার থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, অপহরণের শিকার হননি ওই কৃষক ফরিদ খান। জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই অপহরণের নাটক সাজাতে তিনি স্বেচ্ছা নির্বাসনে গিয়েছিলেন।

ওসি বলেন, প্রতিপক্ষ মো. করিম মোল্লার সঙ্গে জমি নিয়ে মামলা চলছে ফরিদ খানের। সাজানো অপহরণকাণ্ডের পর করিম মোল্লা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদ খানকে আসামি করে প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ফরিদ খানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অপহরণের নাটক সাজানো কৃষক ফরিদ খান ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রামখন্ড গ্রামের মৃত দলিল উদ্দিন খানের ছেলে। তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। গত ১ মে দুপুর ২টার দিকে বাড়ি থেকে ফরিদপুরে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। এরপর রাতে বাড়িতে না ফিরলে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকেন পরিবারের সদস্যরা। সন্ধান না পেয়ে পরদিন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ফরিদের বোন নুরুন্নাহার বেগম।

উদ্ধারের পর ফরিদ খান সাংবাদিকদের জানান, তিনি সদরপুর উপজেলার চর এলাকায় ধান কাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তার সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তির ফোনের মাধ্যমে নিজেই পরিবারের কাছে ৩ লাখ টাকার মুক্তিপণের কথা জানিয়েছিলেন।

মুক্তিপণের বিষয়ে ফরিদ খান আরও জানান, তিনি ধার-দেনা করে এক ভাগিনাকে কিছুদিন আগে প্রবাসে পাঠান। এতে তিনি প্রায় আড়াই লাখ টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এবং নতুন করে মামলা দিয়ে হয়রানি করার জন্য এ নাটক সাজিয়েছিলেন ফরিদ খান।

তিনি বলেন, নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করে। এক পর্যায়ে জানা যায়, সদরপুর এলাকায় ধান কাটার জন্য গিয়েছিলেন। পরে ফরিদ খানের স্বজনদের নিয়ে পুলিশ সদরপুর রওনা হলে তিনি (ফরিদ খান) দ্রুত অবস্থান পরিবর্তন করে ফরিদপুর শহরে তার আইনজীবীর চেম্বারে চলে আসেন। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

জহির হোসেন/এএমকে