উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে নোয়াখালীর উপকূলীয় এলাকায় বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও মাঝারি মাত্রার দমকা হাওয়া বইছে। এতে করে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

বিশেষ করে উপকূলবর্তী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সঙ্গে সারাদেশের নৌযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঝুঁকির আশঙ্কায় বন্ধ রয়েছে যাত্রীবাহী ট্রলার ও নৌযান চলাচল। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ও পর্যটকেরা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নিম্নচাপের প্রভাবে নদ-নদীর পানির উচ্চতা কিছুটা বেড়েছে। জেলা শহরসহ একাধিক নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এখনই বন্যার শঙ্কা করছে প্রশাসন।

নোয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার উন্নতির সম্ভাবনা নেই। বরং এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে জলোচ্ছ্বাসসহ বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা আইয়ুব আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। দিনভর বৃষ্টি হচ্ছে। পানির উচ্চতা কেবল বাড়ছে। প্রচণ্ড দমকা হাওয়া বইছে। মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ফের জোয়ার হলে নিঝুমদ্বীপ তলিয়ে যাবে। ইতমধ্যে মাছের ঘের, পুকুর তলিয়ে গেছে। মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে । 

জেলা শহরের বাসিন্দা সোহরাব উদ্দিন কাজল ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালের পর থেকে বিদ্যুৎ নেই। বাজারেও লোকজন কম। ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। সবচেয়ে বড় চিন্তা, পানির উচ্চতা বাড়ছে। শহরের বিভিন্ন সড়ক ডুবে গেছে। 

আব্দুল হামিদ নামের আরেক বাসিন্দা ঢাকা পোস্টকে বলেন, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ভেঙে যাওয়া মুছাপুর ক্লোজার নির্মাণ না করায় দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে চলেছে নোয়াখালী। অসংখ্য ঘরবাড়ি ইতিমধ্যে তলিয়ে গেছে নদীতে। সরকারের দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া দরকার। 

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপকূলজুড়ে সৃষ্ট এই অবস্থায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আগামী দুই দিন বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। জলাবদ্ধতা থেকে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমরা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং জরুরি খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা আছে।

হাসিব আল আমিন/আরকে