ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৯ মেম্বারের অনাস্থা
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান নূর শরীফ উদ্দিন জুয়েল
কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার ২ নং রাউতি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূর শরীফ উদ্দিন জুয়েলের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইউনিয়নের ৯ জন সদস্য (মেম্বার)। চেয়ারম্যনের প্রতি তারা অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। ফলে রাউতি ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত তিন বছর ধরে চেয়ারম্যান নূর শরীফ উদ্দিন আলম জুয়েল মাসিক সভাসহ সকল ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সভা না করেই সভার ভুয়া রেজুলেশন প্রদর্শন এবং ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে কাজ না করেই কাগজে-কলমে উন্নয়ন কাজ দেখিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন।
বিজ্ঞাপন
ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ কোনো কাজ না করেই একই কায়দায় তিনি আত্মসাৎ করে আসছেন। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দকৃত বিভিন্ন ধরনের ত্রাণ সামগ্রী নিজের লোকজনকে দিয়েছেন। এছাড়াও নামে-বেনামে ত্রাণ সামগ্রী আত্মসাৎ করেছেন। তিনি বিধি-বহির্ভূতভাবে একই বছর একই স্থান দেখিয়ে এলজি এসপি ও হতদরিদ্রদের ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচি ( কর্মসৃজন) প্রকল্প দিয়ে কাজ না করেই বরাদ্দের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। চেয়ারম্যান নূর শরীফ উদ্দিন আলম জুয়েল ইউনিয়নের নাগরিক, ওয়ারিশ ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদ দিতেও অবৈধভাবে নগদ অর্থ গ্রহণ করেন।
রাউতি ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য রাজিয়া সুলতানা নিপা, ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. শাহীন এবং ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আতিকুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান নূর শরীফ উদ্দিন আলম জুয়েল তুঘলকি কায়দায় অনিয়ম-দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছেন। নানা ভয়ভীতি উপেক্ষা করে আমরা সম্মিলিতভাবে গত ১০ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক এবং ২৮ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চেয়ারম্যান নূর শরীফ উদ্দিন আলম জুয়েলের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছি।
বিজ্ঞাপন
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত রাউতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূর শরীফ উদ্দিন আলম জুয়েল তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছেন।
তাড়াইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তারেক মাহমুদ চেয়ারম্যান নূর শরীফ উদ্দিন আলম জুয়েলের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তির কথা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তির ১০ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হয়। এ ঘটনায় কাল-পরশুর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। আর ওই তদন্ত কর্মকর্তা কর্তৃক তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তি ও ঘটনার সত্যতা সাপেক্ষে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
আরএআর