ঢাকা থেকে ২৩ ঘণ্টায় পঞ্চগড়ে, বাড়ি ফেরায় কষ্ট দূর
পাঁচ মাস পর পবিত্র ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে বাড়ি ফিরছেন রেজাউল ইসলাম। তিনি রাজধানীর একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। শুক্রবার দুপুরে তিনি পঞ্চগড় বাজারের চৌরঙ্গী মোড় একটি ব্যাটারি চালিত থ্রি হুইলারে বসে আছেন গ্রামের বাড়ি বোদা উপজেলার আমতলায় যাওয়ার জন্য। এসময় কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, আশুলিয়া থানার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকা থেকে গত বুধবার রাত ১১টায় বাসে উঠি পঞ্চগড়ের উদ্দেশে। বাসটি চন্দ্রা পর্যন্ত এলে আমরা জ্যামে আটকে পড়ি। চন্দ্রা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত আমাদের আসতে ৭-৮ ঘণ্টা সময় লেগেছে। এরপর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আবারও আমরা জ্যামে পড়ি। সেখানে ২-৩ ঘণ্টা সময় লাগে। পঞ্চগড় এসে নামি গতকাল রাত দশটায়। খুব ক্লান্ত হয়ে যাওয়ায় পরে শহরের একটি আবাসিক হোটেলে থাকি। আজকে পঞ্চগড় থেকে বাড়ি যাচ্ছি। বাড়ি যেতে আবার এক ঘণ্টা লাগবে। ঢাকা থেকে পঞ্চগড় আসতে আমার ২৩ ঘণ্টা সময় লেগেছে। তারপরেও বাড়ি আসতে পেরে সব কষ্ট দূর হয় গেছে।
শুধু রেজাউল ইসলামই নয়, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে হাজার-হাজার যাত্রী এভাবেই ছুটে আসছেন নাড়ির টানে। সরেজমিনে পঞ্চগড়ের বাস স্ট্যান্ড ও রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, ঈদের ছুটিতে বাসে, ট্রেনে করে যাত্রীরা পঞ্চগড় আসছেন। পরিবারের সাথে ঈদ করার জন্য।
বিজ্ঞাপন
ঢাকা থেকে পঞ্চগড় আসা রাজ্জাক নামে এক যাত্রী বলেন, যাতায়াতের জন্য আমি সবসময় প্রাধান্য দেই ট্রেনকে। কিন্তু এবার ট্রেনের টিকেট না পাওয়ার কারণে বাসের টিকেট খুঁজি, কিন্তু সেটাও ঢাকা থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত পাইনি। তখন কষ্ট করে রংপুর পর্যন্ত একটা টিকেট ব্যবস্থা করি। ওই টিকেটে রংপুর আসি। এরপর রংপুর থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত আরেকটি বাসে করে আসি। আমার ঢাকা থেকে আসতে ২২ ঘণ্টা সময় লেগেছে।
আবু শামীম নামে আরেক যাত্রী বলেন, আমি আমার স্ত্রী ও ছেলেসহ হেমায়েতপুর থেকে গতকাল রাত দশটায় বাসে করে রওয়ানা দিয়েছি। চন্দ্রা আসতেই রাত সাড়ে তিনটা বাজে। এরপর মোকামতলা থেকে গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত আবার জ্যামে পড়ে যাই। পঞ্চগড় আসলাম আজকে বিকেল ৬টা বাজলো। ২০ ঘণ্টা সময় লাগলো। আবার পঞ্চগড় থেকে গ্রামের বাড়ি তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর যাব। এই রাস্তা যেতে এক দেড় ঘণ্টা লাগবে।
বিজ্ঞাপন
পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে আমাদের চারটি মোবাইল টিম কাজ করছে। সন্দেহভাজনদের আমরা চেক করছি। ঢাকা থেকে রাতে যেসব যাত্রী আসছে, তারা যেন সিঙ্গেল অটোতে না যায়, এজন্য চার পাঁচটা অটো আমরা একসাথে পাঠাচ্ছি। প্রতিটা রোডে আমাদের মোবাইল টিম কাজ করছে। পাশাপাশি আমাদের একটি চেকপোস্ট রয়েছে।
মো. নুর হাসান/এমএএস