ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরার পথে ঢাকামুখী মানুষের চাপ বেড়েছে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে। শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল থেকেই ঢাকা অভিমুখে যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এতে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে যানজট, বাড়ছে যাত্রীদের ভোগান্তি। দুপুর গড়ালেও এই যানজট কমেনি।

তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ায় আরও ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষজন। দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন যাত্রীরা। শুধু তাই নয়, সঠিক সময়ে গাড়ি পাচ্ছেন না টিকিট কাটা যাত্রীরা। আবার যারা পরে টিকিট কাটছেন, তারা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ফিরছেন কর্মস্থলে। 

জানা যায়, যমুনা সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কসহ ঢাকা-বগুড়া, ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ অন্য দিনের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। বিশেষ করে ঢাকামুখী মানুষদের ভিড়ে মহাসড়কজুড়ে যেন মানুষের জনস্রোতে পরিণত হয়েছে। এই অতিরিক্ত চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ ছাড়া যমুনা সেতুতে টোল আদায়ের ধীরগতির জন্য সিরাজগঞ্জ মহাসড়কের সায়দাবাদ থেকে যমুনা সেতু পশ্চিম টোল প্লাজা পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার যানজট লেগে আছে ভোর থেকে। কখনো যানবাহন চললেও যানজট কমছে না। যানজটের কারণে অনেক যাত্রীকে তীব্র গরমে দীর্ঘসময় রাস্তায় আটকে থাকতে হচ্ছে। তার ওপরে বাসের ভাড়া বেশি হওয়ায় কর্মজীবী মানুষ ঝুঁকি নিয়ে উঠছে ছোট-বড় বিভিন্ন ট্রাকে।

বাসের বদলে ট্রাকে উঠেছেন ৪৫ বছর বয়সী গার্মেন্টস কর্মী খাদিজা খাতুন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি গরীর মানুষ। কড্ডা থেকে গাবতলিতে ৩০০ টাকায় যেতাম। আজকে বাস ভাড়া ৮০০ টাকা চাচ্ছে। আমি তাই কষ্ট করে ট্রাকেই উঠেছি।

হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় এসআই ট্রাভেলস বাসে করে সাভার যাচ্ছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী রফিকুল আলম সর্দার। তিনি বলেন, তীব্র গরমে খুবই খারাপ অবস্থা। সিটে তো যাত্রী নিচ্ছেই, দাঁড়িয়েও যাত্রী তোলা হচ্ছে। ভাড়া তো মন মতো চাচ্ছে বাস চালকরা। প্রশাসন আসলেই ভাড়া কমে, এরা গেলেই ভাড়া বেড়ে যায়।

বেশি ভাড়ার বিষয়কে ঈদ বোনাস দাবি করে এসআই ট্রাভেলসের ড্রাইভার রহমান খান বলেন, ঈদের আনন্দ না কাটিয়ে গাড়ি চালাতে আসছি। অতিরিক্ত ভাড়া না, মানুষজন ভালোবেসে আমাদের ঈদ বোনাস দিচ্ছেন।

যমুনা সেতু পশ্চিম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ টোল নিতে দেরি করছে। এইজন্যই পশ্চিম পাড়ে এমন যানজট দেখা গিয়েছে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রউফ বলেন, রোববার দেশের সবকিছু খুলে যাবে। তাই ঢাকামুখী মানুষের ব্যাপক চাপ বেড়েছে। আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

মো. নাজমুল হাসান/এএমকে