সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় জামায়াতে ইসলামীর কর্মীসভায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের একজন নেতার অংশগ্রহণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কর্মীসভাটি অনুষ্ঠিত হয় ১২ জুন, তবে সভায় ওই ছাত্রলীগ নেতার উপস্থিতির ছবিটি ভাইরাল হয় মঙ্গলবার (১৭ জুন)।

জানা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড জামায়াতের উদ্যোগে বজ্রাপুর বাজারে কর্মীসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা রফিকুল ইসলাম খাঁন।

ছবিতে দেখা যায়, সভায় অতিথিদের পাশেই উপস্থিত ছিলেন উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া হোসেন। তিনি বজ্রাপুর গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে। তার রাজনৈতিক পরিচিতি এবং অতীতে ছাত্রলীগের সঙ্গে সক্রিয় সম্পৃক্ততার কারণে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন।

২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আল-মাহমুদ সরকারের অনুমোদিত কমিটিতে জাকারিয়া সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান। দীর্ঘদিন স্থানীয় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের সঙ্গেও ছিল ভালো সম্পর্ক।

তবে অভিযোগ রয়েছে, গত ৫ আগস্টের সরকার পতনের পর থেকে তিনি জামায়াতপন্থিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করেছেন।

ছবিটি ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জাকারিয়া হোসেন বলেন, আমার বাবা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত ইসলামীর রোকন এবং পল্টন থানার কর্মপরিষদের সদস্য। ঈদের সময় বাড়িতে এসে আমাকে ওই কর্মীসভায় নিয়ে যান। আমি ছাত্রলীগ করেছি ঠিকই, তবে বর্তমানে কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই এবং কখনো শিবিরে যোগ দিয়নি।

উল্লাপাড়া উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক শাহজাহান আলি বলেন, জাকারিয়া জামায়াতে যোগ দিয়েছেন কি না সে বিষয়ে আমি কিছু জানেন না।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিরাজগঞ্জ জেলা সদস্য সচিব মেহেদী হাসান বলেন, একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতার জামায়াতের মঞ্চে দেখা যাওয়া রাজনৈতিক আদর্শ ও নৈতিকতার চরম বিপর্যয়। এ ধরনের রাজনৈতিক আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

ছবিটি প্রকাশের পর থেকে উল্লাপাড়ায় স্থানীয় রাজনীতিতে বিষয়টি ঘিরে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও প্রতিক্রিয়া। ওই ছবিটি বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন।

মো. নাজমুল হাসান/এএমকে