হাসপাতালে দালালের দৌরাত্ম্য, ওষুধ কালোবাজারি, খাবারে অনিয়ম এবং চিকিৎসকদের সময়মতো না আসাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদুক)। বুধবার (১৮ জুন) বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত টানা আড়াই ঘণ্টা হাসপাতালটিতে নওগাঁ দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মেহবুবা খাতুন রিতা এ অভিযান পরিচালনা করেন। 

দুদুকের এমন অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন হাসপাতালে আসা সেবাগ্রহীতারা। সেই সঙ্গে এমন অভিযান নিয়মিত পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন তারা। 

নওগাঁ সদর উপজেলার চাঁদপুর গ্রাম থেকে ছেলেকে চিকৎসা করাতে আসা সুমি আক্তার বলেন, হাসপাতালে ছেলেকে ভর্তি করিয়েছি ৫ দিন হচ্ছে। এখনো খাবার পাই নাই। আমাদের বাড়ি দূরে হওয়ায় হোটেল থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে। যারা খাবার বিতরণ করতে আসে তারা দেখে দেখে খাবার দেয়। সবাইকে খাবার দেয় না। দুদকের এমন অভিযান নিয়মিত পরিচালনা হলে হাসপাতালগুলোর দুর্নীতি কমে আসবে।

নওগাঁর কানমটকা এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সবুর বলেন, ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে বাড়িতে এসেছি। তিন দিন আগে ডায়েরিয়ার সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। তিন দিনে কোনো খাবার পাই নাই। আজকে সকালে একটা কলা, রুটি এবং ডিম দিয়েছে। তাছাড়া সব খাবার বাইর থেকে কিনে খেতে হচ্ছে। ডাক্তারারও আমাদেরকে সময় মতো ভিজিট করতে আসে না। 

অভিযানের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় নওগাঁর উপসহকারী পরিচালক মেহবুবা খাতুন রিতা বলেন, হাসপাতালে বরাদ্দের চেয়ে কম খাবার পরিবেশন, ওষুধ কালোবাজারি, হাসপাতালের সরকারি টেন্ডারে বিশেষ শর্ত জুড়ে দেওয়া এবং চিকিৎসকদের সময়মতো না আসাসহ কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে খাবারে অনিয়ম এবং চিকিৎসকদের সময় মতো না আসার প্রমাণ মিলেছে। সরকারি টেন্ডারের কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। নথিপত্রগুলো পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাঠানো হবে।  

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, দুদক কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করেছে। আমাদের এই হাসপাতালটি ২৫০ শয্যা হলেও এখনো বরাদ্দ আসে ১০০ শয্যার। যার কারণে সব রোগীকে আমাদের পক্ষে খাবার দেওয়া সম্ভব হয় না। চিকিৎসকদের সময় মতো না আসার ব্যাপারে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে। এ ব্যাপারে উনারা যে নির্দেশনা দিয়েছেন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

মনিরুল ইসলাম শামীম/আরএআর