কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদীর ভাঙন অব্যাহত থাকায় প্রতি‌দিন ভি‌টে মা‌টি হারা‌চ্ছে মানুষ। কিন্ত সরকার ভাঙন রো‌ধে কার্যকরী পদ‌ক্ষেপ নি‌লেও সময় ম‌তো সে‌টি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ভাঙন কব‌লিত মানুষের মা‌ঝে ক্ষোভ দেখা গে‌ছে।

স্থানীয়‌দের অ‌ভিযাগ, শুষ্ক মৌসু‌মেও নদী ভা‌ঙে। কিন্তু তখন পাউবো দৃশ্যমান কোনো কাজ ক‌রে না। এখন বর্ষা মৌসু‌মে জিও ব্যাগে বালু ভ‌র্তি করা হ‌লেও পা‌নি উন্নয়ন বো‌র্ডের কাজে নেই কোনো গতি। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, জেলার উলিপুর উপজেলার তিস্তা অববাহিকার দলদলিয়া, থেতরাই, গুনাইগাছ ও বজরা ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দিলেও শুধুমাত্র থেতরাই ও বজরা ইউনিয়নের ১৩টি স্পট ভাঙনের আশঙ্কা দেখিয়ে প্রকল্প হাতে নিয়েছে তারা। এজন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে ১৩টি গ্রুপের মধ্যে ভাগ ক‌রে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দিলেও তারা শুধু জিও টেক্সটাইল ব্যাগে বালু ভর্তি করে সারি সারি রেখেছেন। এসব ভাঙন কবলিত এলাকায় প্রায় দুই লাখ ৭০ হাজার বালু ভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ডাম্পিং করা হবে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম পাউবো।

জানা গেছে, থেতরাই ইউনিয়নের কুমারপাড়া ও বামনপাড়া এলাকার ৯০০ মিটার ও বজরা ইউনিয়নের সাদুয়া দামারহাট থেকে কালপানি বজরা পর্যন্ত ২১০০ মিটার চিহ্নিত ক‌রে ভাঙন কবলিত এলাকার জন্য দুই লাখ ৭০ হাজার জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ডাম্পিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।  

সরেজমিনে দেখা গে‌ছে, থেতরাই ইউনিয়নের কুমার পাড়া এলাকায় সারি সারি বালু ভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ। কবে সেগুলো ডাম্পিং করা হবে তাও নিশ্চিত না ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ। পাশেই ফেলে রাখা জিও টেক্সটাইল ব্যাগের কাছ থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। ফলে এসব এলাকা আবারও ভাঙনের কবলে পড়তে পারে বলে এলাকার মানুষজন জানান। 

‌নদী তীরবর্তী এলাকার বা‌সিন্দা গওছর মিয়া, ছাত্তার আলীসহ অনেকেই বলেন, ভাঙনের তীব্রতা বাড়লে এসব জিও ট্রেক্সটাইল ব্যাগ ডাম্পিং করেও কো‌নো কা‌জে আস‌বে না। ফ‌লে সরকারের কোটি কোটি টাকা গচ্ছা যা‌বে। বছরের পর বছর এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও শত শত মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। 

বজরা ইউনিয়নের সাদুয়া দামারহাট এলাকার শ‌হিদুল ইসলাম ও আব্দুর র‌শিদ বলেন, ভাঙন চল‌ছে। কিন্তু পা‌নি উন্নয়ন বোর্ড সময়ম‌তো জিও ব্যাগ ডা‌ম্পিং কর‌ছে না। বন্যার সময় এসব ব্যাগ দি‌লে কোনো কাজেই আস‌বে না। ‌সেই ব্যাগে আবার নদীর পাড় কে‌টে ভরাট কর‌ছে তারা। এসব বল‌লেও শোনে না।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, পানি বেড়ে যাওয়ায় ডাম্পিং কার্যক্রমে কিছুটা ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। আশা করছি দ্রুত এসব এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিংসহ অন্য কাজগুলো শেষ হবে।

মমিনুল ইসলাম/আরকে