ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসন্ডা নদীর ওপর নির্মিত বেইলি সেতুটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে আশির দশকে নির্মিত এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে হাজারো যানবাহন ও পথচারী। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর ও বেনাপোলসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলার মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। অথচ তিন বছর আগে সেতুটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণার পরও এখনো বাস্তবায়ন হয়নি কোনো টেকসই বিকল্প সেতু।

‎প্রায় ১২৩ মিটার দৈর্ঘ্যের এই বেইলি সেতুটি বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের অংশ। দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে এই সেতু দিয়ে যান চলাচল করছে। বর্তমানে সেতুটির প্লেটগুলো নড়বড়ে, কোথাও লোহার পাত নেই, রেলিং ভাঙা। ট্রাক ও দূরপাল্লার পরিবহন উঠলে সেতুটি দুলতে থাকে। প্লেটগুলোতে প্রচণ্ড আওয়াজ হয়। কোথাও আবার গর্ত হয়ে গেছে— যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা।

‎তিন বছর আগে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সাইনবোর্ড দিয়ে রেখেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। প্রতি বছর কয়েকবার করে টেন্ডার ও টেন্ডার বিহীন লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি সংস্কার করা হয়।

‎স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, রাত-বিরাতে ভারি পরিবহন চললে সেতুর কাঁপুনিতে আশপাশের ঘরের দরজা-জানালা কেঁপে ওঠে, ছোট বাচ্চারা ঘুমাতে পারে না।  

আতিকুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, আমার বাড়ি সেতুর একেবারে পাশে। রাতে বড় কোনো বাস বা ট্রাক গেলে প্রচণ্ড শব্দ হয় তাতে ছেলেমেয়েরা ঘুম থেকে জেগে ওঠে। তাছাড়া আমরাও বেশ আতঙ্কে থাকি। আমাদের দাবি হলো দ্রুত এখানে একটি সেতুটি নির্মাণ করা হোক।

‎আবদুর রাজ্জাক বলেন, এই সেতুতে চলাচল করা মানে জীবনের ঝুঁকি নেওয়া। শুধু নামেই মেরামত হচ্ছে, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। কবে নতুন সেতু হবে, আমরা জানি না। এই সেতুতে চলাচল করলে বেশ ভয় লাগে। বড় কোনো দুর্ঘটনার আগে সেতুটি নির্মাণ করা হোক। এখানে দুর্ঘটনা ঘটলে বেশ প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা চাই বড় কোনো বিপদ হওয়ার আগেই সেতুটি নির্মিত হোক।

‎এ বিষয়ে ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার শরিফ খান বলেন, বাসন্ডা বেইলি সেতুটি নতুন করে আরসিসি গার্ডার সেতু হিসেবে নির্মাণের পরিকল্পনায় কাজ চলছে। ইতোমধ্যে  সয়েল টেস্টে মাটির ধরন, শক্তিমত্তা, ভূমিকম্প প্রবণতা, লেয়ার বিশ্লেষণ ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন আমাদের হেড অফিসে সেতু  ডিজাইনের কাজ প্রক্রিয়াধীন। ডিজাইন কাজ শেষ হলেই উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হবে। 

আরএআর