নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় নির্মাণাধীন একটি সিমেন্ট কারখানায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনির উজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রোববার (৬ জুলাই) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন। এরা আগে শনিবার রাতে নরসিংদী সদর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

কারখানা সূত্রে জানা গেছে, হামলার নেতৃত্ব প্রদানকারী বিল্লাল হোসেন ও তার সহযোগীরা যুবদল নেতা মনিরের অনুসারী। কিছুদিন আগে যুবদলের সভাপতি মনির উজ্জামান, স্থানীয় যুবদল নেতা বাদল মিয়া ও নজরুল মাস্টার এই কোম্পানির ড্রেজারের কাজ তাদের দেওয়ার দাবি করেন। কিন্তু মালিক পক্ষ নিজেরাই কাজ করার কারণে তাদের নিষেধ করে দেন। এরপর তারা সেখানে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় তারা এই হামলার ঘটনা ঘটায়। গত ৩ জুলাই হামলার ঘটনায় পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
 
এ বিষয়ে পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা কনফিডেন্স সিমেন্ট ফ্যাক্টরির এজিম (প্রশাসন ও বিধিনিয়ন্ত্রণ শাখা) মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের ওপর হামলা করে অফিস ভাঙচুর, মারধোর, লুটপাট ও চাঁদা দাবির ঘটনা আমাদের ঢাকা অফিসকে জানিয়েছি। এরপর কারখানা কর্তৃপক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মামলার প্রধান আসামি ও ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনিরকে গ্রেপ্তার করে।

এলাকাবাসী জানায়, মনির হোসেন স্থানীয়ভাবে একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে আগেও কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের অনুসারী হিসেবে বেশ পরিচিত।
 
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, ডাঙ্গা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন একটি সিমেন্ট কারখানায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত নামা ৫/৬ জনকে অভিযুক্ত করে পলাশ থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় এজাহারভুক্ত এক নম্বর আসামি মনিরুজ্জামানকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় নরসিংদী সদর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর আদালতে তাকে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন কনফিডেন্স সিমেন্ট ঢাকা লিমিটেড কারখানার ড্রেজারে ডাঙ্গা ইউনিয়নের যুবদল নেতা মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে তার লোকজন হামলা চালায়। তারা নদীপথে ২টি ট্রলারে করে ২৫-৩০ জনের একটি সশস্ত্র দল কারখানায় প্রবেশ করে কারখানার শ্রমিকদের ৬টি কক্ষে ভাঙচুর চালায় এবং মোবাইল, ল্যাপটপ ও মালামাল লুট করে নেয়। হামলায় অন্তত ৭ জন শ্রমিক আহত হন।

তন্ময় সাহা/এমএন