চাঁদপুর শহরের প্রফেসর পাড়া মোল্লা বাড়ি জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা খতিব মাওলানা আ ন ম নূর রহমানের হামলাকারী বিল্লাল হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে চাঁদপুরের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাতুল হাসান আল মুরাদের আদালতে তিনি জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়। 

চাঁদপুর কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক শহীদুল্লাহ ও বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল কাদের খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হামলার শিকার ওই খতিবের নাম মাওলানা আ ন ম নূরুর রহমান মাদানি (৬০)। তিনি চাঁদপুর সদরের গুনরাজদি এলাকার বাসিন্দা। চাঁদপুরের বিভিন্ন মসজিদে তিনি প্রতি শুক্রবার খুতবা দেন।

হামলাকারী বিল্লাল হোসেন সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মনোহরখাদি গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে। শহরের বকুলতলায় বসবাস করেন তিনি। পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

আদালত সূত্রে জানা যায়,  বিকেল ৩টার দিকে বিল্লাল হোসেনকে প্রথমে আদালতে আনা হয়।  এরপর আসামি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে আসামিকে রাত ৮টায় কারাগারে পাঠানো হয়। 

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক নাজমুল হোসেন।

এর আগে শুক্রবার (১১ জুলাই) চাঁদপুর পৌর এলাকার প্রফেসর পাড়া মোল্লা বাড়ি জামে মসজিদে জুমার নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানী। জুমার নামাজে আলোচনা ও খুতবা নিয়ে ক্ষিপ্ত ছিলেন ওই এলাকার ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন। যার কারণে নামাজ শেষে মসজিদের ভেতরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র (চাপাতি) দিয়ে মসজিদের খতিবের ওপর হামলা চালান বিল্লাল। এতে খতিব মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানীর মাথায় মারাত্মক জখম হয়। ওই সময় হামলাকারী বিল্লাল হোসেনকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশ কাছে সোপর্দ করেন। পরে মুসল্লিরা নূর রহমান মাদানীকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার ঢাকার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে চাঁদপুর শহরে ইসলামিক দলগুলো মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।

এদিকে শনিবার সকাল থেকেই গুঞ্জন ওঠে আহত নূর রহমান মাদানী মারা গেছেন। তবে পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আগের চেয়ে সুস্থ আছেন।

মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানীর বড় ছেলে আফনান তাকি বলেন, আমার বাবার ওপর হামলাকারী ব্যক্তির বিচার দাবি করছি। আমার বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার রাতে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার হলি কেয়ার হসপিটালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত আছেন।
  
শুক্রবার রাতেই মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানীর বড় ছেলে আফনান তাকি বাদী হয়ে বিল্লাল হোসেনের নামে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন।

চাঁদপুর কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক শহীদুল্লাহ বলেন, আসামি তার দোষ স্বীকার করেছেন। প্রয়োজনে তাকে রিামান্ডে আনা হবে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল কাদের খান বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। তার সাথে আরও লোকজন জড়িত আছে। সে আদালতে তার দোষ স্বীকার করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন। সেহেতু সে আদালতে দোষ স্বীকার করেছে তাই সেটি পেন্ডিং আছে। তিনি প্রয়োজনে আবারও রিমান্ড চাইবেন। আমরা চাই একটি সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক।

আনোরুল হক/আরএআর