নোবিপ্রবির ৩ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) তিন শিক্ষার্থীর ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার (১২ জুলাই) রাতে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অনিমেষ দেবনাথ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। আহত অন্যরা হলেন সৌমেন বড়ুয়া, কাজী সাওদাজ জামান। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞাপন
এদিকে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছেন। একইসঙ্গে বিকেল সাড়ে ৩টায় নোয়াখালীর চৌরাস্তা এলাকায় এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে একটি যাত্রীবাহী বাসে করে নোয়াখালী ফিরছিলেন তারা। শনিবার দুপুরে বাসটি চৌমুহনীর আমীরুল মিল্লাত মাদরাসার সামনে পৌঁছালে হঠাৎ পেছন থেকে একদল দুর্বৃত্ত তাদের ওপর চড়াও হয়। বাস থামিয়ে জোরপূর্বক তাদের নামিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। শিক্ষার্থীরা হামলার কারণ জানতে চাইলে হামলাকারীরা কোনো সদুত্তর না দিয়ে উল্টো হুমকি দেয়, “তোমরা যদি সিনিয়রদের ডাকো, তোমাদের লাশও খুঁজে পাওয়া যাবে না!” এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
মেহেদী হাসান মেহেদী নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুইদিন পর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর এভাবে স্থানীয়দের হামলা উদ্বেগজনক ও নিরাপত্তাহীনতার প্রমাণ। আমাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বারবার আশ্বাস দিলেও বাস্তবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। তাই আমরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছি।
আল মাহমুদ নামের আরেক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এভাবে দুই দিন পরপর শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা খুবই এলার্মিং। তাই ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে সবাই এক হোন। এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন।
সিনিয়রদের ডাকলে নাকি লাশ খুঁজে পাওয়া যাবে না—তাহলে আমরা সিনিয়ররাও লাশ হয়ে ফিরতে রাজি। দেখা যাক, আপনাদের সাহস কতটুকু।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা থানায় এসেছেন আমাদের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। সেটি মামলা আকারে গ্রহণ করা হয়েছে। অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এএফএম আরিফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর এমন হামলা সত্যিই দুঃখজনক। স্থানীয়দের সাথে সংঘাতে আমরা আমাদের মেধাবী শিক্ষার্থী মাহবুবকে হারিয়েছি। স্থানীয়রা মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাথে কেনো খারাপ আচরণ করে তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনুক।
হাসিব আল আমিন/আরকে