টাকার মালিককে খুঁজে ফেলে যাওয়া ১৫ লাখ টাকা দিলেন অটোচালক
কুমিল্লায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ১৫ লাখ টাকা পেয়ে টাকার মালিককে খু্ঁজে বের করে ফেরত দিয়েছেন অটোরিকশাটির চালক অনিক। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকালে কুমিল্লা নগরীর বজ্রপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। চালক অনিক নগরীর চৌধুরী পাড়া এলাকার বাসিন্দা। তার বাবাও একজন অটোরিকশা চালক।
স্থানীয়রা জানান, অটোরিকশাচালক অনিক শঞরের মরণ নামের এক যাত্রীকে তার গাড়িতে তোলেন। ওই যাত্রী তার মেয়েকে নগরীর বজ্রপুর এলাকার একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে দিতে যান। মেয়েকে স্কুলে নামিয়ে দেওয়ার পর তার মনে হয় টাকার ব্যাগটি অটোরিকশায় ফেলে এসেছেন। পরে দৌড়ে গিয়ে তিনি দেখেন সেখানে অটোরিকশাটি নেই।
বিজ্ঞাপন
অপরদিকে, যাত্রী মরণকে নামিয়ে দিয়ে অটোরিকশাচালক অনিক নগরীর রাজগঞ্জ এলাকায় একটি চা দোকানে চা খেতে থাকেন। হঠাৎ অনিকের চোখ যায় তার গাড়ির সিটের দিকে। অনিক দেখতে পান গাড়ির সিটে নীল রঙের একটি পলিথিন ব্যাগ পড়ে আছে। অনিক কাছে গিয়ে সেটিকে হাতে নেয়। পরে ব্যাগটি খুলতে গিয়ে দেখে নীল পলিথিন ব্যাগের ভেতর আরেকটি কালো রঙের পলিথিন ব্যাগে কিছু একটা মোড়ানো। অনিক সেই ব্যাগটিও খোলে। সেটি খুলে চোখ ছানাবড়া হয়ে যায় তার। ১৫ লাখ টাকা ছিল তাতে। এত টাকা একসাথে কখনো দেখেনি অনিক। অনিক অস্বস্তি অনুভব করতে থাকে।
পরে পাশের আরও এক অটোরিকশা চালককে ডাক দিয়ে টাকাগুলো দেখান অনিক। ওই অটোরিকশা চালক বিস্তারিত শুনে টাকাগুলো মালিককে ফেরত দেওয়ার পরামর্শ করেন। এসময় অনিক তার বাবাকে ফোন করেন। বাবাকে বিস্তারিত বললে তার বাবাও তাকে একই পরামর্শ দেন।
বিজ্ঞাপন
পরে অনিক কালক্ষেপণ না করে আবারও অটোরিকশা নিয়ে বজ্রপুর সেই স্কুলের সামনে যান। গিয়ে দেখেন সেই লোকটি নেই। এরপর কয়েকবার একই জায়গায় খোঁজ করে টাকার মালিককে খুঁজে পান তিনি। পরে টাকাগুলো ফেরত দেন মালিককে।
এ বিষয়ে অনিক জানান, ব্যাগে এত টাকা দেখে আমি প্রথমেই আমার বাবাকে কল দেই। তিনি বললেন, যার জিনিস, তাকে খুঁজে দিয়ে আয়। অন্যের টাকা নিয়ে বাঁচতে চাই না। আমি এরপর কয়েকবার ঘুরে ওই এলাকায় এসে শেষ মেশ ব্যাগের মালিককে খুঁজে পাই।
টাকাগুলোর মালিক মরণ সূত্র বলেন, আমি কুমিল্লা নগরীর ছাতিপট্টি এলাকার একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। সকালে বাসা থেকে টাকাগুলো নিয়ে বের হই। ভেবেছিলাম মেয়েকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে টাকাগুলো নিয়ে দোকানে চলে আসব। কিন্তু ভুল করে টাকার ব্যাগটি অটোরিকশাতে ফেলেই চলে যাই। ফিরে এসে দেখি অটোরিকশাটি নেই। খুব ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু অটোরিকশা চালকের সততায় টাকাগুলো ফেরত পেলাম। তার জন্য অনেক আশির্বাদ।
আরিফ আজগর/এমএএস