লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে মৎস অবতরণকেন্দ্র এলাকায় ভুলুয়া নদীর ভাঙনে ঐতিহ্যবাহী ব্রিজঘাট বাজার বিলীন হয়ে যাওয়ার পথে। ওই বাজারের বয়ারচর ব্রিজের দুই পাশ থেকে মাটি সরে গেছে। এতে রামগতি-নোয়াখালী যোগাযোগের অন্যতম সড়কটি বিচ্ছিন্ন হয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙনরোধে ভুলুয়া নদী খনন, জিওব্যাগ ডাম্পিং ও বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে বাজারসহ সড়ক-ব্রিজ রক্ষার জন্য জোরালো দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বয়ারচর ব্রিজের দুই পাশের কিছু অংশে রাস্তা তলিয়ে গিয়ে বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এ ভাঙন বেড়েই চলেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ব্রিজের দুই পাশে ভুলুয়া বদীত্র ডুবোচর রয়েছে। নদীতে ভাটা এলে পূর্ব পাশের চর দেখা যায়। এই চরের কারণে নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে। এতে ব্রিজের দক্ষিণ পাশে বাজারের অংশের ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। যে কোনো সময় বাজারসহ রামগতি-নোয়াখালী যোগাযোগের অন্যতম সড়কটি ব্রিজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। ব্রিজেও ফাটল দেখা দিয়েছে। সড়ক বিচ্ছিন্নসহ বাজার বিলীন হয়ে গেলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখিন হবে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা জানায়, চরের কারণে নদী গতিপথ পাল্টে বাড়িঘর, কবরস্থান গিলে খেয়েছে। প্রায় ৫ শতাধিক কবর বিলীন হয়ে গেছে। যে কোনো সময় বাজারসহ সড়কটি ভাঙনে তলিয়ে যেতে পারে। এ অঞ্চলের মানুষ নানান দুর্ভোগের কবলে রয়েছে। সড়কটিতে প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজার মানুষের যাতায়াত রয়েছে। এটি বিলীন হয়ে গেলে স্থানীয় প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দা চরম দুর্ভোগে পড়বে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। এখানে মৎস্য অবতরণকেন্দ্রকে ঘিরে মৎস্য ব্যবসায়ীদের যে ব্যবসা রয়েছে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ মুহূর্তে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাজার, ব্রিজ ও সড়ক রক্ষায় উপজেলা, জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের জোরালো ভূমিকা চেয়েছেন তারা।

মাছ ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন বলেন, ব্রিজের দুই পাশে বড় বড় গর্ত সৃষ্ট হয়েছে। এ সড়কে বড় বড় ট্রাক চলাচল করে। এখন ঝুঁকি বেড়েছে। ব্রিজেও ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

জমির উদ্দিন নামে একজন বলেন, ব্রিজঘাটটি ২০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মাছঘাট। কোটি কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয় এ ঘাটে। নদীর ডুবোচরের কারণে ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বহুবার আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ঘটনাটি অবিহিত করেছি। কিন্তু ভাঙনরোধে কোনো সুরাহা মিলছে না। ঘাট-বাজার ও সড়ক রক্ষায় দ্রুত সময়ের মধ্যে চরটি খনন করার দাবি জানাচ্ছি।

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, ডুবোচরের কারণে নদী গতিপথ পরিবর্তন করেছে। যার কারণে সড়ক ও বাজারটি ভাঙনের মুখে রয়েছে। এ জন্য ডুবোচরটি অপসারণ করা গেলে নদীর গতিপথ ঠিক হয়ে যাবে। তাহলে বাজার ও সড়কটি রক্ষা পাবে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বিষয়টি অবিহিত করা হবে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এএমকে