রাজবাড়ীতে নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করলেন এনসিপি নেতারা
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সিপাড়ায় নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) স্থানীয় নেতারা। বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেলে রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দের স্থানীয় নেতারা এই নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ সময় এনসিপির নেতারা ভাঙন এলাকার প্রত্যেকটি স্পট ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। খবর পেয়ে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে আসেন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া এলাকায় ফের নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত চার দিনে অন্তত নদী পাড়ের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকার কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় কৃষকদের ৬০ থেকে ৭০ বিঘা কৃষি জমি। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে প্রাইমারি স্কুল, কবরস্থান, ঈদগাহসহ কয়েক’শ বাড়িঘর।
পরিদর্শনকালে এনসিপির নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন, আজাদী আজম, গাজী জাহিদ হাসান, সাইদুর জামান সাকিব, রাকিবুল হাসান, রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, আবু রায়হান রাফি, সুমন প্রামনিক, মেহেদী নুর হেলাল, অ্যাডভোকেট নাজমুল হক, রুহুল আমিন, রেদোয়ানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) স্থানীয় নেতা গাজী জাহিদ হাসান বলেন, নদী ভাঙন কোনো দলিয় বা রাজনৈতিক সমস্যা নয়। আমরা মানবিক জায়গা থেকে ও আমাদের রাজনৈতিক জায়গা থেকে এখানে পরিদর্শনে এসেছিলাম। এসে দেখি নদীতে শত শত বিঘা কৃষি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদী ভাঙনের এই খারাপ অবস্থা দেখে আমি আমার নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করি। আমরা নদী ভাঙনের বিষয়টি এনসিপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ে জানায়। তখন কেন্দ্রীয় নেতা রাজবাড়ীর কৃতি সন্তান খালেদ সাইফুল্লাহ ভাই ও তাসনীম জারা ভাবির সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে। আমরা ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে সবার গণস্বাক্ষর নিয়ে একটি আবেদন মন্ত্রণালয় পর্যন্ত পৌঁছেছি। আজকে পর্যন্ত আমাদের কাছে যে ম্যাসেজ আছে খালেদ সাইফুল্লাহ ভাই ও জারা ভাবি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে এই এলাকার নদী ভাঙন ঠেকানোর জন্য একটি প্রকল্প পাশ করার পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে এখানে ৫০ থেকে ৬০ হাজার জিও ব্যাগ চলে আসবে এবং খুব দ্রুতই কাজ শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে মনে করি এটা সরকারের না জনগণের কাজ। আমরা সব জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, গোয়ালন্দ বাসীকে সঙ্গে নিয়ে ও এনসিপির সব নেতাকর্মী মিলে নদী ভাঙন রোধে কাজ করবো। তবে এই নদী ভাঙন ঠেকাতে গেলে স্থায়ীভাবে নদী শাসন করতে হবে। আমরা এনসিপির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে দাবি জানাবো। এছাড়াও আমরা জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা তাদের জরুরি খাত থেকে ১ হাজার বস্তা জিও ব্যাগ ফেলানোর মত অর্থ দেবে।
গাজী জাহিদ হাসান বলেন, আমরা গ্রামবাসীকে জানাতে চাই জাতীয় নাগরিক পার্টি তরুণ প্রজন্মের একটি দল। গণঅভ্যুত্থান থেকে উঠে আসা একটি দল। আমরা আপনাদের সবসময় পাশে আছি। আমাদের লড়াই জনগণের জন্য, ক্ষমতার জন্য না। নদী ভাঙন জাতীয় সমস্যা। এটা কীভাবে স্থায়ীভাবে সমাধান করা যায় এনসিপি সেটা চেষ্টা করছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান বলেন, ভাঙন ঠেকাতে আমরা দুই দফায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছি। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা কথা বলেছি। এছাড়াও আমাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে কিছু পরিমাণ সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এমএন