কাঠের সাঁকো ভেঙে দুর্ভোগে ২৫ গ্রামের মানুষ
যশোরের কেশবপুরের সাগরদাঁড়িতে কপোতাক্ষ নদের ওপর কাঠের সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় সাগরদাঁড়ি ও সারসা গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুই পাড়ের অন্তত ২০-২৫ গ্রামের মানুষ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাঁকোটি মেরামতের কথা জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান সাগরদাঁড়িতে ব্রিজ না থাকায় দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে কেশবপুর ও তালা উপজেলার হাজারো মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠে কপোতাক্ষ নদের বাঁশের সাঁকো। এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন কেশবপুরের সাগরদাঁড়ি, শেখপুরা, রেজাকাটি, বগা, মহাদেবপুর ও তালা উপজেলার সারসা, সরুলিয়া, সেনেরগাতি, ধানদিয়াসহ ২০-২৫ গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকেন। গত ২১ জুলাই সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন এসব এলাকার মানুষ।
বিজ্ঞাপন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাগরদাঁড়িতে রয়েছে কলেজ, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ পথচারীদের চলাচলে বাঁশের সাঁকোটি ব্যবহার করতে হয়। এ ছাড়া, সপ্তাহের শনি, সোম ও বুধবার সাগরদাঁড়িতে হাট বসে। এ হাটে ওপারের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল বেচাকেনা করে থাকেন। প্রতিদিন সাগরদাঁড়িতে পর্যটক আসেন। বর্তমানে কচুরিপনা সরিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় তাদের পারাপার হতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সাজ্জাত আলী নামে একজন বলেন, সম্প্রতি অতি বর্ষণে কপোতাক্ষ নদে স্রোত অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। উজান থেকে নেমে আসা শ্যাওলা ও কচুরিপনার চাপে সাঁকোটি ভেঙে নদে বিলীন হয়ে যায়। এতে দুই পাড়ের মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
সাগরদাঁড়ি বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজ্জাক আহমেদ রাজু বলেন, চলতি বছরের শুরুতে মধুকবির জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে দুই উপজেলার মানুষের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকোটি মেরামত করা হয়েছিল। উজানের বিপুল পরিমাণের শ্যাওলা আটকে সাঁকোটি আবারও ভেঙে পড়ে। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে দুই পারের মানুষ কপোতাক্ষ নদের ওপর ওই সাঁকো দিয়ে পারাপার হতেন। কিন্তু সেটা ভেঙে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে এসব মানুষ। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি করে আসছেন।
সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, ওই স্থানে সেতু নির্মাণে ম্যাপসহ কারিগরি প্রতিবেদন তৈরি করে উপজেলা প্রকৌশলী দফতরের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেতু নির্মাণে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেকসোনা খাতুন বলেন, সাগরদাঁড়ির কপোতাক্ষ নদের কাঠের সাঁকোতে কচুরিপনা বেঁধে সাঁকোর স্থায়িত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সাঁকোর অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রেজওয়ান বাপ্পী/এএমকে