রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আলদাতপুর হিন্দুপল্লীতে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে একজন ভুক্তভোগী গঙ্গাচড়া মডেল থানায় মামলাটি করেন। তবে মামলার বাদীর নাম জানা যায়নি। ঘটনার দুদিন পর অবশেষে মামলা করা হলো।

এদিন রাত পৌনে ৮টার দিকে গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, হিন্দুপল্লীতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় বিকেলে ওই হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত একজন মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে মামলার বাদীর নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

একই তথ্য জানিয়েছে গঙ্গাচড়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান। তিনি বলেন, হিন্দুপল্লীতে হামলার ঘটনায় বিকেলে একটি মামলা হয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে আপাতত বাদীর নাম পরিচয় প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না।

ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় আমরা প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছি। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে গত শনিবার (২৬ জুলাই)  রঞ্জন কুমার রায় নামে এক শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় পাশের এলাকার লোকজন এসে আলদাতপুর ছয়আনি বালাপাড়া হিন্দুপল্লীতে ওই শিক্ষার্থীর বাড়ি মনে করে অন্য আরেকজনের বাড়িতে ভাঙচুর চালান। পর দিন রোববার আরেক দফা হিন্দুপল্লীতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে বলে ভুক্তভোগীরা দাবি করেন।

এতে ১৮টির মতো পরিবারের ঘরবাড়ি তছনছ হয়। আতঙ্কে অনেক পরিবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা। হামলা ঠেকাতে গিয়ে এক পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়। গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রশাসনের হিসাবে ১৫টি বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে।

এদিকে আটক রঞ্জন কুমার রায়কে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার (২৭ জুলাই) আদালতের মাধ্যমে কিশোর পুনর্বাসনকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএএস