সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে তলিয়ে যায় রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরের প্রধান ফটক। এতে আদালতের বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেটদের যাওয়া আসাই যেমন ভোগান্তি হচ্ছে ঠিক তেমনি সেবা নিতে আসা মানুষ, কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। জলমগ্নতায় হাঁটাচলা ও দাঁড়ানোরও সুযোগ নেই আদালত প্রাঙ্গণে।

সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে এ দুর্ভোগের চিত্র দেখা গেছে। এ সময় আদালতে আসা বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা ভোগান্তির কথা জানান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজবাড়ী আদালতের প্রবেশমুখের প্রধান ফটকেই বৃষ্টির পানিতে থৈ থৈ করছে। পানি ডিঙিয়েই সেবাপ্রার্থীরাসহ আদালতের কর্মকর্তাকর্মচারী ও আইনজীবীরা অফিসে যাচ্ছেন।

আদালতে সেবা নিতে আসা কয়েকজন বলেন, আদালত একটি জনগুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এখানে জেলা ও জেলার বাইরে থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক সেবা নিতে আসেন। কিন্তু আদালতের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গায় বৃষ্টি হলেই সারাবছর পানি জমে থাকে। পানি মাড়িয়ে সেবাপ্রার্থী ও বিচারপ্রার্থীদেরকে আদালতে যেতে হয়। আদালতের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গায় পানি জমে থাকা দুঃখজনক। সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তরেই বিষয়টি নজরে আসছে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজবাড়ী আদালতের কয়েকজন কর্মচারী বলেন, বৃষ্টির হলেই আদালতের প্রধান ফটকের প্রবেশদ্বারে হাঁটু পানি জমে থাকে। এই পানি বের হওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই। পানি নামতে দীর্ঘ ৬/৭ ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যায়। পানি জমে থাকলে তখন আমাদের একটু ঘুরে আদালতের দ্বিতীয় ফটক দিয়ে ঢুকতে হয়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এই পানি বের হতে পারে না। ড্রেন নির্মাণ হলে এই ভোগান্তি দূর হবে।

আদালতে মামলার কাজে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, মামলার কাজে এসে দেখি আদালতের সামনে প্রায় হাঁটু সমান পানি। বৃষ্টি হলেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়। আদালতের সামনে এখন দাঁড়ানোর সুযোগ নেই।

পাংশা উপজেলা থেকে আসা আরেক বিচারপ্রার্থী আকমল শেখ বলেন, প্রতিদিন শত শত মানুষ সেবা নিতে আসেন এই আদালতে। কিন্তু আদালত ভবনের সমানে পানি জমে থাকার বিষয়টি দুঃখজনক।

রাজবাড়ী আদালতের কয়েকজন আইনজীবী বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা খরাপ থাকায় জেলা জজ আদালতের ফটকে পানি জমে থাকে। এতে মানুষের ভোগান্তি হয়। 

রাজবাড়ী পৌরসভার প্রশাসক মাজহারুল ইসলাম বলেন, সরকারি স্থাপনার ভিতরে মেরামত বা দেখভাল করার দায়িত্ব গণপূর্ত বিভাগের। কিন্তু তারপরও আমরা পৌরসভায় বরাদ্দ পেলে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন তৈরি করে দিব।

রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি আসলে আদালত চত্বরে পানি জমলে সেটা আগে পেছন দিয়ে নিষ্কাশন হয়ে যেতো। কিন্তু সেই নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এখন আদালত চত্বরের সামনে পানি জমে থাকে। যদিও এটা ঠিক করার দায়িত্ব গণপূর্ত বিভাগের নয়। এটা পৌরসভা দেখবে।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/আরকে